বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০১:১৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

অসময়ে বন্যা-ভাঙন: উত্তরের চার জেলায় ব্যাপক ক্ষতি

কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারী প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত সময় : মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২১
  • ২২৫ পাঠক পড়েছে

অসময়ের বন্যা ও নদীভাঙনে তিস্তাঘেরা উত্তরের চার জেলা রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারীতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বসতভিটা হারিয়ে গৃহহীন হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। অনেক বিদ্যালয়, পাকা সড়ক ও ব্রিজ বিলীন হয়েছে তিস্তাগর্ভে। ফসলের মাঠ প্লাবিত হয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষক।

কুড়িগ্রামে গৃহহীন হয়েছে প্রায় দুই হাজার পরিবার। এর মধ্যে রাজারহাটে তিস্তার ভাঙনে গৃহহীন হয়েছে এক হাজার পরিবার। তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমারের আটটি পয়েন্টে চলছে ভাঙন। গত পাঁচ দিনে গৃহহীন হয়েছে প্রায় ২০০ পরিবার। দুধকুমারের ভাঙনে রায়গঞ্জ, তিলাই ও ঘোগাদহ এলাকায় বসতভিটা ও আবাদি জমি চলে যাচ্ছে নদীগর্ভে। তিস্তার ভাঙনে গতিয়াশাম, থেতরাই, খিবাবখা, ঠুটা পাইকর ও বজরায় প্রতিদিন গৃহহীন হচ্ছে মানুষ। এসব এলাকায় এ বছর ১১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাকা সড়ক ও ব্রিজ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, ভাঙনকবলিত পয়েন্টগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভাঙন ও বন্যায় গৃহহীন মানুষের তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ের কাছে ঢেউটিন ও টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে বিতরণ করা হবে। এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অসময়ের বন্যায় কুড়িগ্রামের আড়াই হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। টাকার অঙ্কে ফসলের ক্ষতি প্রায় তিন কোটি টাকা।

লালমনিরহাটে পানির তোড়ে দুটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে স্পারসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কয়েকটি স্থাপনা। এতে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে পাউবো। এদিকে তিস্তাপারের আরেক জেলা রংপুরে বন্যায় নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দুটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তাৎক্ষণিকভাবে সেটি মেরামত করা হয়েছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, বন্যায় সদর উপজেলার রাজপুর ও আদিতমারীর মহিষখোচা ইউনিয়নে তিস্তার দুটি স্পার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মহিষখোচা ও সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২৫০ মিটার অংশ ভেঙে গেছে। খুনিয়াগাছ ও সদর উপজেলার মোগলহাটে ২০০ মিটার ‘রাভারমেন্ট ওয়ার্ক’ ভেঙেছে।

লালমনিরহাট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, সব মিলিয়ে পাউবোর পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। এদিকে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব জানিয়েছেন, রংপুরে এবারের বন্যায় পাউবোর তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে বন্যা চলাকালে গঙ্গাচড়ার দুটি পয়েন্টে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের আংশিক ক্ষতি হয়েছিল।

অসময়ের বন্যায় নীলফামারীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্ষতি হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। বন্যায় তিস্তা ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাসসহ কমান্ড এলাকার ১০ স্থানের ৯৮০ মিটার বাঁধ ধসে গেছে। পাউবোর রংপুরের প্রধান প্রকৌশলী জ্যোতি প্রসাদ ঘোষ জানান, এবারের বন্যায় পাউবোর ১৫ কোটি টাকা ও কৃষি এবং অন্যান্য স্থাপনা মিলিয়ে ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2020 । দৈনিক আজকের সংবাদ
Design and Developed by ThemesBazar.Com
SheraWeb.Com_2580