মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন যে তিনি চীনের বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হতে চলা ২০২২ সালের শীতকালীন অলিম্পিক গেমসকে ‘কূটনৈতিক বয়কটের’ কথা ভাবছেন। মেক্সিকো এবং কানাডার নেতাদের সাথে আলোচনার আগে প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমরা এখন বিবেচনা করছি।” অলিম্পিক আসর কূটনৈতিক বয়কটের অর্থ- কোনো মার্কিন কর্মকর্তাকে গেমে যোগ দিতে পাঠানো হবে না।
মার্কিন-চীন সম্পর্কের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে এই সিদ্ধান্ত বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। গত সোমবার, বাইডেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সাথে প্রথমবার সরাসরি আলোচনায় বসেন। হোয়াইট হাউসে, বাইডেনের মুখপাত্র জেন সাকি বলেছেন যে মার্কিন ও চীনের নেতারা সোমবার তাদের তিন ঘন্টার ভার্চুয়াল বৈঠকে অলিম্পিক নিয়ে কোনো আলোচনা করেন নি। ডেমোক্র্যাটিক এবং রিপাবলিকান উভয় আইন প্রণেতারা চীনা মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদের উপায় হিসাবে এই কূটনৈতিক বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন।
আমেরিকার বিদেশ দফতর জানিয়েছে, শিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন ঘটনার জেরেই এমন পদক্ষেপ করার কথা ভাবা হচ্ছে। আগামী ৪-২০ ফেব্রুয়ারি চীনে শীতকালীন অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানী বেজিংয়ের পাশাপাশি হেইবেই প্রদেশের ঝ্যাংজিয়াকউ এবং পার্বত্য অঞ্চল ইয়াংকিঙে হবে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। বেইজিংই একমাত্র শহর যেখানে গ্রীষ্মকালীন এবং শীতকালীন দু’রকম অলিম্পিকেরই আসর বসবে।
কূটনৈতিক বয়কট মার্কিন ক্রীড়াবিদদের প্রভাবিত করবে না, তবে জেন সাকি বলেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনই চূড়ান্ত করছে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে হতে চলা অলিম্পিক আসরে মার্কিন কর্মকর্তাদের ভূমিকা কি হবে! চীন যেভাবে হংকংয়ের রাজনৈতিক স্বাধীনতাকে দমন করতে পদক্ষেপ করেছে তা নিয়েও উত্তেজনা বেড়েছে।
হোয়াইট হাউসে আনুষ্ঠানিক আলোচনার জন্য মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডোর এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর আগমনের আগেই প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মন্তব্য সামনে এসেছে। গত মাসে, মার্কিন সিনেটররা বিলের একটি খসড়া সংশোধনের প্রস্তাব করেছিলেন যা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে গেমসে মার্কিন কূটনীতিকদের উপস্থিতি নিয়ে সরকারী তহবিল ব্যয় করতে নিষিদ্ধ করেছিল।
ন্যান্সি পেলোসি, কংগ্রেসের সবচেয়ে সিনিয়র ডেমোক্র্যাট, চীনা অলিম্পিক আসর বয়কটের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন যে এরপরেও মার্কিন নেতারা যদি সেখানে উপস্থিত থাকেন তাহলে তারা “নৈতিক কর্তৃত্ব” হারাবেন। রিপাবলিকান সিনেটর টম কটন বৃহস্পতিবার সমস্ত ক্রীড়াবিদ, কর্মকর্তা এবং মার্কিন কর্পোরেট স্পনসরদের অলিম্পিক গেমস সম্পূর্ণ বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন । ডনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে জাতিসংঘের সাবেক মার্কিন প্রতিনিধি নিকি হ্যালিও অলিম্পিকের আসরকে সম্পূর্ণ বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন।