গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে ক্ষুব্দ কেন্দ্র। দলের মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের অডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পর রাস্তায় নেমে আসে সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা। দলীয় ফোরামে বিষয়টিকে সমাধান না করে রাস্তায় প্রতিবাদের নামে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কাছে ইস্যু তুলে দেওয়ায় মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লার উপরোক্ত কেন্দ্রীয় নেতারা।
ফলশ্রুতিতে নরসিংদী এবং সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের মতো পরিণতি ঘটতে পারে গাজীপুর মহানগরেরও। জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের বড় একটি ইউনিটের শীর্ষ দুই নেতার এমন দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব হঠাৎ করে প্রকাশ্যে চলে আসায় শঙ্কিত অনেকে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কৌশল হিসেবে ডিজিটাল প্রযুক্তির কারসাজিতে অন্তঃকলহ তৈরি করা হয়েছে কিনা তাও যাচাই বাছাই করছে কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের দেয়া প্রশ্নের উত্তরের তারিখ আভাস পাওয়া গেছে।
নাম না প্রকাশের শর্তে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম এর যে অডিও ক্লিপ প্রকাশ হয়েছে তা একটি ধারাবাহিক কথোপকথন। সেই ধারাবাহিক কথারি একটি অংশ ভাইরাল করা হয়েছে। আগে পিছে কি কথা ছিল তা শুনলে বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া যাবে।
নেতারা বলেন, যতটুকু তারা শুনেছেন তাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উদাহরণ দিয়ে জাহাঙ্গীর আলম নিজের টিকে থাকার গল্প কাউকে যেন শোনাচ্ছিলেন। সেখানেই তিনি বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তার শ্রোতাদের বোঝাচ্ছিলেন। বুঝাতে গিয়ে তিনি যা বলেছেন তা খন্ডিতভাবে প্রকাশ করলে আপত্তিকরই হয়। তবে জাহাঙ্গীর বিষয়টি ঘরোয়া পরিবেশে আলোচনা করলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেভাবে এটি প্রকাশ পেয়েছে তাতে ষড়যন্ত্রের একটি আভাস পাওয়া যায়। নিজ দলের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ অথবা আওয়ামী লীগের বিরোধী শক্তি দলের অভ্যন্তরে তো তৈরি করতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই অডিও ক্লিপ ভাইরাল করেছে।
আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা না করে সেই আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান। তিনি নিজের কর্মীদের দিয়ে গাজীপুরে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবাদ এবং সড়ক অবরোধের মতো ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছেন। যা ক্ষমতাসীন দলের একজন নেতার সঠিক সিদ্ধান্ত নয় বলে মনে করেন অনেকে। সড়ক অবরোধের মতো ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে মন্তব্য করে সংশ্লিষ্টরা বলছেন আজমত উল্লাহ খানের মতো প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা উচিত ছিল বিষয়টি দলীয় ফোরামে অবহিত করে সমাধান নিয়ে আসা। তা না করে তিনি রাজপথে যে প্রতিবাদ করেছেন এতে দিন শেষে আওয়ামী লীগই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাজীপুরের সাধারণ মানুষসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে পরিষ্কার হয়েছে বৃহত্তর এই ইউনিটেও আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। ফলে এখন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগকেও সিরাজগঞ্জ ও নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের পরিণতি পথেই হাঁটতে হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।