কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে স্বেচ্ছায় পঞ্চম দফায় (প্রথম অংশ) ভাসানচরের উদ্দেশ্যে আরও সহস্রাধিক রোহিঙ্গা সদস্যকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুরে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে ২১টি বাসে করে রোহিঙ্গা সদস্যরা চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। আজ আরও একটি দল ভাসানচরে যাওয়ার কথা রয়েছে। তারা সোমবার (১ মার্চ) বিকালে শরণার্থী শিবির ছাড়েন।
বুধবার (৩ মার্চ) সকালে চট্রগ্রাম নৌবাহিনীর জাহাজে করে পঞ্চম দফায় রোহিঙ্গাদের একটি দল ভাসাচনরে পৌঁছাবে উল্লেখ করে নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) খোরশেদ আলম খান জানান, ‘এবারে আরও তিন হাজারের মতো রোহিঙ্গা সদস্য ভাসানচরে হস্তান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এই সংখ্যাটি হেরফের হতে পারে।’
জানা গেছে, উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে ভাসানচরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সোমবার বিকাল থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে রোহিঙ্গারা সপরিবারে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে আসতে থাকে। তারা রাতে চট্টগ্রামের ক্যাম্পে পৌঁছাবেন। সেখান থেকে পরের দিন নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় ভাসানচরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
অতিরিক্ত ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসু দ্দৌজা নয়ন জানান, ‘পঞ্চম দফায় রোহিঙ্গাদের একটি দল উখিয়া থেকে ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। এবারে কতজন যাচ্ছে সেটি এখন বলা যাচ্ছে না।’
আরআরআরসি কার্যালয়ের সূত্রমতে, গত ডিসেম্বর থেকে চার দফায় কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে প্রায় ৯ হাজার ৭০০ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়। এছাড়া সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বাংলাদেশ জলসীমায় ফিরে আসা ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে গত বছরের মে মাসে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে ভাসানচরে নেওয়া হয়। তারাও এখন সেখানে রয়েছে।
কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে তিন হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।
মিয়ানমারের সেনাদের অভিযান থেকে প্রাণে বাঁচাতে দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরগুলোতে বসবাস করছে। এদের বেশিরভাগই ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নৃশংস অভিযানের সময়ে পালিয়ে এসেছিলো। আরএইচআরআই’র হিসাবে বর্তমানে ভারতে রয়েছেন প্রায় ১৬ হাজারের মতো রোহিঙ্গা শরণার্থী।