অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, করোনার কারণে পুরো বিশ্বই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। যেকোনো মহামারির সময় চ্যালেঞ্জ আসে। পাশাপাশি সম্ভাবনাও সৃষ্টি হয়। তবে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সামনে সম্ভাবনা বেশি।
বুধবার দুপুরে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভার বৈঠকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ১৬টি প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। এসব প্রস্তাবে ব্যয় হবে এক হাজার ৩৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে দেবে ৬৩৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। বিশ্বব্যাংক, এডিবি, ইআইবি ও ডানিডা থেকে ৪০৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা আসবে ঋণ হিসেবে।
বাজেট ঘাটতি নিয়ে এক প্রশেুর জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে উন্নয়নশীল সকল দেশের বাজেটেই ঘাটতি আছে। বাংলাদেশের ঘাটতি তুলনামূলকভাবে কম। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়ার বাজেট ঘাটতি আছে এবং তা বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি। ভিয়েতনামের বাজেট ঘাটতি বাংলাদেশের সমান। ফলে ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। অর্থনীতি ভালো অবস্থায় আছে। রাজস্ব আয় বেড়েছে। রপ্তানি আরও বাড়ছে। রিজার্ভ, রেমিট্যান্সে অনেক অগ্রগতি হয়েছে।’
অর্থমন্ত্রীর কাছে সাংবাদিকরা স্বাস্থ্য খাতের সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি এবং নিম্ন মানের মাস্ক অতিরিক্ত দামে কেনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘একটি নির্দিষ্ট অংকের বেশি পরিমাণের কেনাকাটা করলে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটির অনুমোদন লাগে এবং সেগুলোর পর্যালোচনাও কমিটি করে। স্বাস্থ্য বিভাগের যে কেনাকাটার কথা বলা হচ্ছে- সেগুলো তারা নিজেরাই করেছে। ফলে এ বিষয়ে তারাই (স্বাস্থ্য বিভাগ) বলতে পারবে।’
এ ছাড়া ভারত পরবর্তী ধাপের টিকা সরবরাহ করেনি বা কবে নাগাদ করবে তা পরিস্কার না। এ অবস্থায় অর্থমন্ত্রী যে এর আগে টাকা ফেরত নেওয়ার কথা বলেছিলেন সে বিষয়ে কোনো অগ্রগতি আছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘চুক্তি কী হয়েছে, কতদিনের জন্য হয়েছে সেগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় জানে।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার চুরি বিষয়ক ঘটনার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে এক প্রশেুর জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এই চুরি ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সরকার মামলা করেছে। মামলাগুলো বিচারাধীন। ফলে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না।
রাজস্ব সংগ্রহ ব্যবস্থা বিশেষ করে ভ্যাট সংগ্রহ নিয়ে অর্থমন্ত্রী সন্তুষ্ট কি-না জানতে চাইলে মুস্তফা কামাল বলেন, এক্ষেত্রে এনবিআরকে এককভাবে দোষ দেওয়া যাবে না। সময় স্বাভাবিক যাচ্ছে না। এর মধ্যে যে কিছু কাজ হয়েছে সেটাই ভালো। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কাজের গতি বাড়বে।
তিনি বলেন, ‘মোট রাজস্ব সংগ্রহ বেড়েছে। তবে পদ্ধতিগুলো কাজে লাগানো যায়নি। কিছু ইএফডি মেশিন বসানো হয়েছে। আরও বসানো হবে। এগুলো এনবিআরের কেন্দ্রীয় সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। আশা করা যায়- আগামীতে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’