পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট বাঁচাতে পারল না বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেট তুলে নিয়ে স্বাগতিকদের ফলোঅন করতে বাধ্য করেন সাজিদ খান। দ্বিতীয় ইনিংসেও ৪ উইকেট আদায় করলেন এই অফ স্পিনার। সাকিব আল হাসানের ফিফটির পরও ইনিংস ব্যবধানে হারল টাইগাররা।
বুধবার ঢাকা টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিনে ইনিংস ও ৮ রানের জয় তুলে নেয় পাকিস্তান।
চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছিল ৮ উইকেটে। ফলে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলো মুমিনুল হকের দল। এর আগে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল স্বাগতিকেরা।
এই ম্যাচে পাকিস্তানের জয় তুলে নেওয়াকে অসাধারণই বলতে হবে। ম্যাচের প্রথম তিন দিনের বেশির ভাগ সময়ই ভেসে যায় বৃষ্টিতে। তৃতীয় দিনে কোনো বলই মাঠে গড়ায়নি। অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন ড্র হবে এই টেস্ট। কিন্তু সেই ‘মরা ম্যাচে’ প্রাণ সঞ্চার করে ইনিংস ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছে সফরকারীরা।
মঙ্গলবার ম্যাচের চতুর্থ দিনে ৪ উইকেটে ৩০০ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে দেয় পাকিস্তান। জবাব দিতে নেমে ফলোঅনের চোখ রাঙানি নিয়ে দিন শেষ করে বাংলাদেশ।
আগের দিনের ৭ উইকেটে ৭৬ রান নিয়ে পঞ্চম ও শেষ দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। আর মাত্র ৬ ওভারের মধ্যেই বাকি তিন উইকেট হারিয়ে ৮৭ রানে গুটিয়ে যায় তারা। ঘরের মাঠে যা তাদের আগের সর্বনিম্ন রানের সমান।
প্রথম ইনিংসে ২১৩ রানের লিড পাওয়া পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম বাংলাদেশকে ফলোঅন করায়। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ২০৫ রানে।
শাহিন শাহ আফ্রিদি ও হাসান আলির তোপে ২৫ রান যোগ করতেই হারিয়ে ফেলে টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে। এরপর সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস প্রতিরোধ গড়লেও পারেননি টেস্ট বাঁচাতে।
মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস পঞ্চম উইকেটে ৭৩ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন। ব্যক্তিগত ৪৫ রানে লিটন ফেরেন সাজিদ খানের শিকার হয়ে।
এরপর সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ৪৯ রানের জুটি গড়েন মুশফিক। তবে চা বিরতির আগে রান আউটে কাটা পড়েন মুশফিক। ৪৮ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এরপর মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে ৫১ রান যোগ করেন সাকিব। যে জুটিতে ম্যাচ বাঁচানোর আশা জাগে স্বাগতিকদের। তবে ১৪ রান করা মিরাজকে ফিরিয়ে বাবর আজম টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম উইকেট শিকার করেন। খানিক পর সাকিবকে বোল্ড করে ফেরান সাজিদ খান। ১৩০ বলে ৬৩ রান করেন সাকিব।
এরপর তাইজুল ইসলাম, খালেদ আহমেদ, ইবাদত হোসেনরা পারেননি ম্যাচ বাঁচাতে বা ইনিংস পরাজয় এড়াতে।
ম্যাচে ১২৮ রানে ১২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন সাজিদ খান। এই ২৮ বছর বয়সী তারকা পাকিস্তানের হয়ে মাত্র চতুর্থ টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন। তার প্রথম ইনিংসের বোলিং ফিগার ৮-৪২, যা পাকিস্তানের কোনো অফ স্পিনারের সেরা।
সবমিলে পাকিস্তানের হয়ে ইনিংসে সেরা বোলিংয়ে সাজিদের অবস্থান চতুর্থ। ৫১ রানে ৯ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে কিংবদন্তি লেগ স্পিনার আব্দুল কাদির, ৮৬ রানে ৯ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে পেসার সরফরাজ নওয়াজ এবং ৪১ রানে ৮ উইকেট নিয়ে তৃতীয় স্থানে ইয়াসির শাহ।
সিরিজ সেরা হয়েছেন আবিদ আলি। চট্টগ্রাম টেস্টে যিনি প্রথম ইনিংসে ১৩৩ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে খেলেছিলেন ৯১ রানের ইনিংস।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দ্বিতীয় টেস্ট, ঢাকা
পাকিস্তান ৩০০-৪ ডি.: বাবর ৭৬, আজহার ৫৬
বাংলাদেশ ৮৭ অলআউট: সাকিব ৩৩; সাজিদ ৮-৪২ এবং ২০৫ অলআউট: সাকিব ৬৩; সাজিদ ৪-৮৬)।
ফল: পাকিস্তান ইনিংস ও ৮ উইকেটে জয়ী।