সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৫৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

সমালোচকদের সংযতভাবে কথা বলার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর

স্টাফ রিপোর্টার:
  • প্রকাশিত সময় : মঙ্গলবার, ১৭ মে, ২০২২
  • ২৫১ পাঠক পড়েছে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের বড় প্রকল্পগুলো নিয়ে অনেক সমালোচকেরা অর্বাচীনের মতো মিথ্যা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে তাদের সংযতভাবে কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তারা অর্বাচীনের মতো একেকটা কথা বলবে আর মিথ্যে বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করবে। এটা কিন্তু গ্রহণ করা যায় না।’

মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (একনেক) সভার সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।

করোনা এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ সারা বিশ্বের উন্নত এবং অনুন্নত দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলেছে এবং দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ইউরোপের অনেক দেশ আছে যেখানে ১৭ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। জার্মানির মতো জায়গায় ভোজ্যতেলের অভাব। একমাত্র অলিভ ওয়েল ছাড়া কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। ইংল্যান্ডের মতো জায়গায় তেল নির্দিষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে, এক লিটারের বেশি কেউ নিতে পারবে না। আমেরিকায় মুদ্রাস্ফীতি ৮ ভাগের ওপরে উঠে গেছে, ১০ ভাগে উঠে যাবে। ১ ডলারের ডিজেল-পেট্রোলের দাম ৪ ডলারে উঠে গেছে।

তিনি বলেন, অনেক জায়গায় এখন মানুষের একবেলা খেতেই কষ্ট হচ্ছে এবং সমগ্র বিশ্বেই এই অবস্থা বিরাজমান। তারপরও তার সরকার এ দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সক্ষম হলেও আমদানিনির্ভর এসব পণ্যের প্রভাবতো অর্থনীতিতে পড়বেই। কারণ উৎপাদন যেমন হ্রাস পেয়েছে তেমনি শিপমেন্ট ব্যয় বেড়ে গেছে। যে কারণে দেশের ভেতর একটু মূল্যস্ফীতি বা জিনিষ পত্রের মূল্যবৃদ্ধি হতে পারে। শেখ হাসিনা এই প্রেক্ষাপটে দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানান, সবাইকে আমি এটুকু অনুরোধ করব- সবাই যদি একটু সাশ্রয়ী হন, মিতব্যয়ী হন বা সব ব্যবহারে সবাই যদি একটু সতর্ক হন, তাহলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্য যে বেড়েছে এবং সেটা যে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কারণে সেটা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতে হবে। যদিও সমালোচকেরা সমালোচনা করবেই। আওয়ামী লীগ সরকারে আছে বলেই অবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সমর্থ হয়েছে, না হলে দেশের মধ্যে অরাজকতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারত বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এ সময় তিনি জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই দেশের উৎপাদন বাড়ানোর এবং এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রাখার তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

দেশের বিভিন্ন মেগাপ্রকল্পে বিশেষ করে ‘রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প’ অহেতুক অধিক অর্থ ব্যয় হয়েছে বলে ডিজিটাল বাংলাদেশের প্লাটফর্মে অবাধ তথ্য প্রবাহের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন টক শোতে সরকারবিরোধীদের ঢালাও সমালোচনার উত্তর দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘পিপিপির ভিত্তিতে পরিবেশবান্ধবভাবে তৈরি এই অত্যাধুনিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ আমাদের অর্থনীতির ভিত যে কতটা মজবুত করবে তা তারা চিন্তা করেন না। আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়াতে তারা তো এখন বিদ্যুৎ পেয়ে গেছেন। যখন ১০ ঘণ্টা, ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পেতেন না তখন এর চাহিদাটা বুঝতেন। আর কিছু লোকই থাকে যারা সবসময় সমালোচনা করতে পছন্দ করে, নিজেদেরটা তারা দেখে না, জনগণের ভালোমন্দ বোঝে না।’ এ সময় পদ্মা সেতুতে রেল লাইন রাখা এবং অর্থ ব্যয় নিয়ে সমালোচনার উত্তরে নানা পরিসংখ্যান তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর একটি টাকাও আমরা কারো কাছ থেকে ধার করিনি বা ঋণ নেইনি। এটি বাংলাদেশের সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে করা হচ্ছে।তিনি মানুষকে বিভ্রান্ত করার মতো তথ্য প্রদানকারী সমালোচকদের সংযত হয়ে কথা বলারও পরামর্শ দেন।

জরুরি অবস্থাকালীন সরকারের পদলেহনকারীরা বেশি সমালোচনা করে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তারাই বেশি কথা বলে, তারাই সমালোচনা বেশি করে, যারা ইমার্জেন্সি সরকারের পদলেহন করেছে, চাটুকারিতা করেছে, তারাই সমালোচনা বেশি করে। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। যাই হোক কে কী বলল সেটা নিয়ে আমি কখনো ঘাবড়াইও না, চিন্তাও করি না। দেশকে ভালোবেসে দেশের মানুষের জন্য যেটা করা ন্যায়সঙ্গত সেটাই করি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তার সরকার পত্রিকা পড়ে নয়, বরং দেশের মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে এবং তাদের প্রয়োজন অনুভব করে দেশের উন্নয়নে নানামুখী সিদ্ধান্ত নিয়ে এতদিন দেশ পরিচালনা করেছেন এবং সেটাই অব্যাহত রাখতে চান।’

প্রধানমন্ত্রী এ সময় বৈঠকে উপস্থিত সবাইকে কোথায় কী লেখা হলো না হলো- তা নিয়ে চিন্তা না করে নিজের আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলার আহ্বান জানান। করোনাভাইরাস, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং সর্বোপরি বিশ্বব্যাপী চলমান অস্বাভাবিক পরিস্থিরি মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি সচল রাখতে পারায় তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং কেউ আর বাংলাদেশকে পেছনে ফেরাতে পারবে না বলেও দৃঢ় আস্থা পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

নিউজটি শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2020 । দৈনিক আজকের সংবাদ
Design and Developed by ThemesBazar.Com
SheraWeb.Com_2580