আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটি থেকে বহিষ্কৃত হেলেনা জাহাঙ্গীরের দুই সহযোগী হাজেরা খাতুন ওরফে অনি এবং সানাউল্লাহ নুরীকে প্রতারণার মামলায় রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
ঢাকার মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসীর আদালত রোববার আসামিদের জামিন আবেদন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
হাজেরা খাতুন হেলেনার প্রতিষ্ঠিত জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনের ডিজিএম। সানাউল্লাহ নুরী জয়যাত্রা টিভির জিএম (অ্যাডমিন)। সানাউল্লাহ নুরী জয়যাত্রা টিভির প্রতিনিধি সমন্বয়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন।
তিন দিনের রিমান্ড শেষে পুলিশ আসামিদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে।
হাজেরা খাতুনের পক্ষে ফিরোজুর রহমান মন্টু এবং সানাউল্লাহ নুরীর পক্ষে আমানুল করিম লিটন জামিন আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করেন পল্লবী থানার নিবন্ধন শাখার সদস্য মো. শরিফুল ইসলাম।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে হাজেরা-সানাউল্লাহকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
পল্লবী থানায় প্রতারণা মামলায় ৩ আগস্ট হেলেনা জাহাঙ্গীরের দুই সহযোগী হাজেরা ও সানাউল্লাহে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরদিন আদালতে তোলা হলে তাদের তিন দিনের রিমান্ডে পাঠান বিচারক।
অভিযোগ, হেলেনা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে যোগসাজশে সরকারের অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও জয়যাত্রা টিভিকে স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল দাবি করে দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতিনিধি নিয়োগ দিতেন। প্রতিনিধিদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা জামানত হিসেবে গ্রহণ করে আত্মসাৎ করতেন। প্রতিনিধিদের কাছ থেকে প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করছিলেন।
র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১-এর অভিযানে ২৯ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশান-২ এলাকার ৩৬ নং রোডের ৫ নং বাড়ি ‘জেনেটিক রিচমন্ড’ -এ অভিযান চালিয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
অভিযানে ১৯ বোতল বিদেশি মদ, ১টি ক্যাঙ্গারুর চামড়া, ১টি হরিণের চামড়া, ২টি মোবাইল ফোন, ১৯টি চেক বই ও বিদেশি মুদ্রা, ২টি ওয়াকিটকি সেট এবং জুয়া (ক্যাসিনো) খেলার সরঞ্জাম-৪৫৬টি চিপস জব্দ করা হয়।
ওই দিন রাতে জয়যাত্রা টেলিভিশন স্টেশনেও অভিযান পরিচালনা করা হয়। পরে বিটিআরসির সহযোগিতায় র্যাব মিরপুরে অবস্থিত হেলেনা জাহাঙ্গীরের অনুমোদনহীন জয়যাত্রা টেলিভিশন স্টেশন সিলগালা করে এবং অবৈধ মালামাল জব্দ করে।
গ্রেপ্তারের পর হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হয়েছে প্রতারণার মামলাও। সব মামলাতেই রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে হেলেনাকে।