সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন অনলাইনে সরব ছিল একটি প্রতারক চক্র। দেশে বসেই বিদেশি বন্ধু সেজে অনলাইনে তাদের ফাঁদে পড়েছেন দেশের অনেক মানুষ। খুইয়েছেন ৮২ লাখ টাকা। এরমধ্যে একজনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতারক চক্রের চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সাইফুল ইসলাম আরিফ (৩২), ওমর ফারুক রনি (৪০), আনিছুর রহমান (২৬) এবং শহিদুল ইসলাম সোহেল (৩৬)।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে অবস্থিত সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক।
তিনি বলেন, আতিকুর রহমান নামে একজন ভুক্তভোগীর দেয়া অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার ঢাকার ক্যান্টনমেন্টের মানিকদি ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে প্রতারক চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের একটি দল। চক্রের সদস্যরা ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছিল।
সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক বলেন, ভুক্তভোগী আতিকুর রহমান নিজেকে বিদেশি পরিচয় দিয়ে ফেসবুকের মাধ্যমে বন্ধুত্ব করতো। একপর্যায়ে বাংলাদেশি বন্ধুকে উপহার হিসেবে পার্সেলে ইউএস ডলার পাঠানোর কথা বলে ফাঁদে ফেলতো চক্রটি।
তিনি আরো বলেন, পরবর্তীতে তাদের সহযোগী কাস্টমস অফিসার পরিচয় দিয়ে আতিকুর রহমানকে ফোনে পার্সেল আসার কথা এবং সেই পার্সেল স্ক্যান করে বিপুল পরিমাণ ইউএস ডলার আছে বলে অবগত করে। তারা পার্সেল সংগ্রহ, লিগালাইজেশন, ইন্টারন্যাশানাল মর্টগেজের কথা বলে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সর্বমোট ৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা অপরাধ স্বীকার করেছে। এছাড়া পলাতক অপর আসামি হারুন অর রশিদ কামাল, জসিম সিকদার, হৃদয় আহমেদ, মহসিন, ওসমান গণি, আয়েশা আক্তার রত্না, রেহানা আক্তার, মাহমুদুল হাসান, হালিম, কাউছার হাসানসহ অজ্ঞাত দেশি বিদেশিসহ আরো কয়েকজন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা প্রকাশ করেছে।
গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে সিআইডিকে জানায়, তারা ভুক্তভোগী আতিকুর রহমান ছাড়াও আরো বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে যৌথ ব্যবসার মূলধন সংগ্রহ ও বিদেশে চাকরি দেয়ার নামে প্রায় ৮২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে।
পুলিশের এই উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, তাদের বিরুদ্ধে মতিঝিল ও লালবাগ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত দুটি মামলা অধিকতর তদন্ত হচ্ছে।