রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাড়া দেশের ৬৩টি জেলায় ৫’শ স্পটে একযোগে বোমা হামলা চালানো হয়। তখন বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। একযোগে বোমা হামলার জন্য দীর্ঘ প্রস্তুতি, নেটওয়ার্ক, জনবল, বোমা সরবরাহ এতো সহজ নয়। এগুলো একদিনে হয়নি। রাষ্ট্রযন্ত্র সেদিন নীরব ছিলো কেন? নিশ্চয়ই সরকার সে ঘটনার প্রশ্রয়দাতা। তা না হলে কিভাবে এই দীর্ঘ প্রস্তুতি জঙ্গিরা বাস্তবায়ন করেছে।’
তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের মাধ্যমে এদেশে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের সূচনা করেছিলো। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে গ্রেনেড হামলা এবং ২০০৫ সালে ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলা সংগঠিত হয়। এ সব হত্যা সন্ত্রাসের মাস্টারমাইন্ড বিএনপি।
মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যৌথভাবে এই সভার আয়োজন করে।
১৬ বছর আগে ২০০৫ সালে দেশের ৬৩টি জেলায় একযোগে বোমা হামলার ঘটনায় তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি সরকারকে দায়ী করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতা ছাড়া এই ধরনের হামলা সম্ভব নয়।
বিএনপি সরকারের শাসনামলে জঙ্গিদের উত্থান হয়েছিল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ১৭ আগস্টের বোমা হামলা ছিলো উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর শক্তি পরীক্ষা। সিরিজ বোমা হামলার মধ্যে এদেশে প্রকাশ্যে আসে জঙ্গি কর্মকাণ্ড। বাংলা ভাইদের হাতে রাজশাহীর একটি অংশ দখলেই ছিলো বলা চলে। তারা সেখানে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করতো।
দেশের বিভিন্নস্থানে আদালতে বোমা হামলার প্রসঙ্গ তুলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুলন্ঠিত করার জন্য বিএনপি জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দিয়েছে। বিএনপি সরকার জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত রেখেছে। বিএনপির কাছে স্বাধীনতা কখনো নিরাপদ ছিলো না, এখনো নেই।
তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। ষড়যন্ত্রের রাজনীতির নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। হাতের তালু দিয়ে আকাশ ঢাকা যায় না। সত্য বিকশিত হবেই। আগস্ট ট্রাজেডির কুশীলব জিয়াউর রহমান আর বেগম জিয়া গ্রেনেড হামলার।
সম্প্রতি খালেদা জিয়ার জন্মদিন নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যকে ‘অরাজনৈতিক ও শিষ্টাচারবিবর্জিত’ বলে বর্ণনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুলের ওই বক্তব্যরে জবাবে খালেদা জিয়ার একাধিক জন্মতারিখের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, এখানে শিষ্টাচার কিভাবে ভঙ হলো । অসত্য কি বললাম? আপনারা খালেদা জিয়ার জন্মদিন নিয়ে জাতির সাথে তামাশা করেছেন। সেটা বললে কি অন্যায়। তাহলে বলে তা এতোগুলো জন্মদিবস কেন? এগুলো তো আওয়ামী লীগের বানানো না। আপনাদের দেয়া তথ্যই। সর্বশেষ বেগম জিয়ার করোনা টেস্টেও যে জন্মতারিখ দিয়েছেন তা আপনারাই দিয়েছেন।
এ সময় ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালনকে ‘প্রতিহিংসার মানসিকতা’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনারা এখনো জন্মদিন পালন থেকে সরে দাড়াননি। কেক কাটেননি কিন্তু ফুল দিয়েছেন, মিলাদ মাহফিল করেছেন। আপনার এটাই করবেন।
ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রকৃত জন্মদিন সম্পর্কে জনগণকে জানিয়ে প্রহসনের পথ থেকে সরে আসার আহ্বান জানান।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। সভা পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ন কবির।
