৫ জুন, আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস। বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালনের পিছনে উদ্দেশ্য হলো, পরিবেশ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। সর্বপ্রথম ১৯৭৪ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জ দ্বারা পালিত হয়েছিল এই দিনটি। প্রতি বছরই দিবসটি আলাদা আলাদা শহরে, আলাদা আলাদা প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে পালিত হয়।
প্রকৃতিকে কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য রোজই হতে পারে পরিবেশ দিবস। তবে প্রকৃতি না বাঁচলে মানবজাতিই যে বিপন্ন হবে তার গুরুত্ব এবং এ নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোই মূলত ৫ জুনের বিশেষত্ব। শিল্পায়ন এবং নগরায়নের জেরে গোটা বিশ্বজুড়েই পরিবেশের দফারফা। বিশ্ব উষ্ণায়ণ ঘুম ছুটিয়েছে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের। যে ভাবে পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ছে, ভূগর্ভে সঞ্চিত জল ও জ্বালানি তলানিতে এসে ঠেকেছে , তাতে অদূর ভবিষ্যতে মানব সভ্যতার সামনে যে বিশাল সংকট এসে উপস্থিত হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার ওপরেই বর্তায়। একটু চেষ্টা করলেই পরিবেশ রক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারি আমরাও।
১৯৬৮ সালের ২০ মে সুইডেন সরকার জাতিসংঘের অর্থনীতি ও সামাজিক পরিষদের কাছে একটি চিঠি পাঠায়। চিঠির বিষয়বস্তু ছিল প্রকৃতি ও পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে তাদের গভীর উদ্বেগের কথা। ওই বছরই জাতিসংঘের পক্ষ থেকে পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি সাধারণ অধিবেশনের আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরের বছর জাতিসংঘের পক্ষ থেকে পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা এবং সমাধানের উপায় খুঁজতে সদস্যরাষ্ট্রগুলোর সম্মতিতে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে ১৯৭২ সালের ৫ থেকে ১৬ জুন জাতিসংঘ মানব পরিবেশ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনটি ইতিহাসের প্রথম পরিবেশ-বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের স্বীকৃতি পায়। ১৯৭৩ সালে সম্মেলনের প্রথম দিন ৫ জুনকে জাতিসংঘ ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দেয়। ১৯৭৪ সাল থেকে প্রতিবছর দিবসটি বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে।
জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি এর ঘোষণা অনুযায়ী ‘প্রতিবেশ পুনরুদ্ধার, হোক সবার অঙ্গীকার’ প্রতিপাদ্যে এবং ‘ প্রকৃতি সংরক্ষণ করি, প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করি’ শ্লোগানে বিভিন্ন দেশ এ বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন করছে। এ বিষয়ে পরিবেশ বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ব পরিবেশ দিবসকে উপলক্ষ্য করে দেশের বিপুল জনগোষ্ঠী বিশেষ করে বর্তমান প্রজন্ম প্রতিবেশ ব্যবস্থা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে সরকার প্রত্যাশা করে।
জনগণের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন অধিদপ্তরের মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচিসমূহের বহুল প্রচারের জন্য বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকল মোবাইল ফোন অপারেটরের মাধ্যমে ক্ষুদে বার্তা প্রেরণ করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দৈনিকে ক্রোড়পত্র প্রকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থান, স্থাপনা ও সড়কে ব্যানার, ফেস্টুন স্থাপন করে পরিবেশ সংরক্ষণের গুরুত্ব উপলব্ধি করে মানুষকে গাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ব পরিবেশ দিবস এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ২০২১ এর প্রতিপাদ্য এবং শ্লোগান বহুল প্রচারের মাধ্যমে সারা দেশে জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্যে গণমাধ্যমের সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।