দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানকে ৬১ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করে লিটন দাসের অর্ধশতকে ৮ উইকেটে ১৫৫ রান তুলে স্বাগতিক বাংলাদেশ। জবাবে ১৪ বল বাকি থাকতেই ৯৪ রানে অলআউট আফগানিস্তান। এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। রান তাড়া করতে নেমে নাসুম আহমেদের তোপের মুখে পড়ে সফরকারী দল। নাসুম একাই তুলে নেন প্রথম চারটি উইকেট। তার স্পিন ঘূর্ণিতে ব্যর্থ হয়ে একে একে ফিরে গেছেন হযরতুল্লাহ জাজাই (৬), রহমানুল্লাহ গুরবাজ (০) ও দারউইস রাসুলি (২) ও কারিম জানাত (৬)।
আফগানিস্তানের পরের দুই উইকেট নিজের করে নেন টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। পঞ্চম উইকেটে দলের হাল ধরার চেষ্টা করা আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবিকে সাজঘরে ফেরান ১৬ রানে। আর ম্যাচে আফগানিস্তানের সবচেয়ে সফল ব্যাটার নাজিবুল্লাহ জাদরানকেও আউট করেন সাকিব। আউট হওয়ার করেন জাদরান করেন ২৬ রান।
প্রতিরোধ গড়তে ব্যর্থ আফগানদের দাঁড়াতে দেননি তিন উইকেট শিকার করা শরিফুল ইসলামও। শুরু থেকেই খাটো লেংথে বল করে রশিদকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিলেন। ওই ওভারেই ইয়াসিরের ক্যাচ বানিয়ে রশিদকে (১) ফেরত পাঠান তিনি। লেগ স্পিনার হলেও ব্যাটসম্যান হিসেবে জুড়ি আছে রশিদ খানের। মাঝে মধ্যেই চার-ছক্কায় মাতে রশিদের ব্যাট। তবে এই ম্যাচে রশিদকে দাঁড়াতে দেননি তরুণ পেসার শরিফুল।
এর আগে টস জিতে উদ্বোধনী জুটিতে ওপেন করতে নামেন বিপিএল মাতানো মুনিম শাহরিয়ার ও মোহাম্মদ নাঈম। প্রথম ওভারে বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন মুনিম। কিন্তু সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। মাত্র ২ রান করে আউট হন এই ওপেনার। তৃতীয় ওভারে দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে নাঈমকে তুলে নেন আফগান পেসার ফজলহক ফারুকি। আম্পায়ার সায় না দিলেও রিভিও নিয়ে নাঈমকে ফেরত পাঠায় আফগানিস্তান।
দলীয় ৪৭ রানে বাংলাদেশকে বিপদে ফেলে সাজঘরে ফেরেন সাকিব আল হাসান। কাইসের বলে সুইপ করতে গিয়ে ফাইন লেগে মুজিবের তালুবন্দি হবার আগে ৬ বল খেলে মাত্র ৫ রান করেন তিনি।
সাকিব ফেরার পর লিটন-মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে বড় জুটির আশায় ছিল বাংলাদেশ। ক্রিজে এসে কাইস আহমেদকে বিশাল ছক্কা মেরে শুরু করলেও ১০ রানের বেশি করতে পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৭ বলে ১ ছয়ে তিনি এই রান করেন। আজমতুল্লাহ ওমরজাইয়ের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন তিনি।
৪ উইকেট হারিয়ে লিটন-আফিফের জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে বাংলাদেশ। এরপর ১৪তম ওভারে ৩ চার ও ২ ছয়ে ৩৪ বলে ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি তুলে নেন লিটন দাস। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের পর তৃতীয় কোনো দলের বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি পেলেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। সর্বশেষ ২০২০ সালের মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবশেষ অর্ধশতক পেয়েছিলেন তিনি।
ব্যক্তিগত অর্ধশতক গড়ে দলীয় ১২৬ রানে ফারুকিতে পরাস্ত হন লিটন। আফগান পেসারের স্লোয়ারে ওমরাজাইয়ের তালুবন্দি হবার আগে ৪৪ বলে ৬০ রান করে ফেরেন তিনি। স্কোরকার্ডে ১ রান যোগ হতেই লিটনের পথ ধরেন আফিফও। সেট হয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি আফিফ। ২৪ বলে ২৫ রান করেন আফিফ। এছাড়া ৮ রানে অভিষিক্ত রাব্বি এবং ৫ রানে শেখ মেহেদি হাসান আউট হন। এদিকে ৩ রানে নাসুম এবং ৪ রানে শরিফুল অপরাজিত থাকেন।
আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে আফগানিস্তানকে পেছনে ফেলার সুবর্ণ সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে বাংলাদেশকে। এই সিরিজ জিততে পারলে টাইগাররা আফগানদের টপকে যাবে টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে। যদি সিরিজ ১-১ এ ড্র হয়, তাহলে কোনো দলেরই অবস্থান পরিবর্তন হবে না। পাল্টাবে না রেটিংও।