বিএনপি চেয়ারপারসনের জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে জানিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়ার অবস্থা ক্রিটিক্যাল। হয় খালেদা জিয়া বাঁচবেন, না হয় আমরা বাঁচব। দেশে তিনি চিকিৎসার অভাবে মারা যাবেন, আর আমরা বসে থাকতে পারি না। শুক্রবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়াকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা কোনো রাজনৈতিক ভাষার কথা তিনি বলেননি। খালেদা জিয়া উড়ে এসে জুড়ে বসেননি মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একজন নেত্রী যিনি দুই শিশুপুত্র নিয়ে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনীর কারাগারে ছিলেন। তিনি উড়ে এসে জুড়ে বসেননি। দীর্ঘ নয় বছর জনগণকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি এখনো কারাগারে রয়েছেন গণতন্ত্রের জন্য।
তিনি বলেন, দেশকে রক্ষা করতে হলে, জনগণকে রক্ষা করতে হলে, গণতন্ত্রের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হলে, আমাদের বাতিঘর খালেদা জিয়াকে সুস্থ করতে হবে, মুক্ত করতে হবে। ভিত্তিহীন মামলায় খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, যে টাকার কথা তারা বলেছে, যে টাকার মামলায় নেত্রীর সাজা হয়েছে, সেই টাকা এখন ব্যাংকে তিনগুণ, চারগুণ হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, প্রতিশোধ, অহংকার এবং দাম্ভিকতার কারণে আজকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে এভাবে কারাগারে রাখা হয়েছে। কারণ তারা জানে যদি খালেদা জিয়া বাইরে থাকেন তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হতেন।
তিনি বলেন, দেশকে বাঁচাতে হলে, স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হলে, জনগণকে রক্ষা করতে হলে, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে হলে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সুস্থ করতে হবে, মুক্ত করতে হবে। তার সঙ্গে আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জড়িয়ে আছে। সভায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আওয়ামী লীগের ক্ষমতা থাকার কোনো যোগ্যতাই নেই। কিন্তু তারপরও তারা ক্ষমতায় আছে। সময়টা খুবই খারাপ। তারা বিরোধী দলগুলোকে শেষ করার চক্রান্ত চলছে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি বলেন, আমি সত্যি সত্যি জানি না খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কতটা খারাপ। তবে, আমি চিকিৎসককে জিজ্ঞেস করলাম তার অবস্থা আগের চাইতে কী ভালো, নাকি খারাপ? তখন চিকিৎসকের চেহারায় একটা বার্তা দেখলাম। যদি তার অবস্থা ভালো হতে চিকিৎসক ভালো বলতেন, কিন্তু তিনি ভালো বলতে পারেননি। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম, জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, গণ-অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর প্রমুখ।