চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের রাঙ্গুনিয়া সার্কেল কার্যালয়কে দুর্নীতিমুক্ত উল্লেখ করে ঘোষণাপত্র সাঁটিয়ে দিয়েছেন সার্কেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আনোয়ার হোসেন শামীম। সেইসঙ্গে এই দপ্তরের সকল কাজে পেশাদারত্বের আদর্শমানসমূহ (প্রফেশনাল স্ট্যান্ডার্ডস) যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয় মর্মেও দাবি তার।
জানা যায়, গত আগস্ট মাসের শুরুতে রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এএসপি আনোয়ার হোসেন শামীম। এরপর থেকেই অনিয়ম দুর্নীতি প্রতিরোধে কঠোর ভূমিকায় তিনি। তার দায়িত্বপ্রাপ্ত রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া থানার সর্বস্তরের পুলিশ সদস্যদেরকে দেওয়া হয় কঠোর বার্তা। শুধু বার্তা বলেই তিনি দায়িত্ব শেষ করেননি, নিজেই তৈরি করেছেন উদাহরণ। পুলিশের বিরুদ্ধে অনেক পুরনো অভিযোগ- ‘ভেরিফিকেশনে ঘুষ’ গ্রহণের বদলে ভেরিফিকেশনে গিয়ে উল্টো তিনি উপহার দিয়ে এসেছেন ফুল এবং মিষ্টি। জিডি সংক্রান্ত জন হয়রানি দূর করার জন্য তিনি নিজ খরচে থানায় সরবরাহ করেছেন বিনামূল্যে জিডি করার ফর্মও।
দুর্নীতি প্রতিরোধে এই জন নন্দিত পুলিশ কর্মকর্তার সর্বশেষ অভিনব উদ্যোগ হলো- নিজ অফিসে ‘আমি এবং আমার অফিস দুর্নীতিমুক্ত’ -এমন ঘোষণা লেখা সম্বলিত কাগজ ঝুলিয়ে দেওয়া।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সম্মানিত অভিভাবক পুলিশ সুপার জনাব এসএম রশিদুল হক পিপিএম স্যারের নির্দেশে শতভাগ দুর্নীতিমুক্তভাবে এই সার্কেল অফিস কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আমাদের এই স্বচ্ছ কার্যক্রম সম্পর্কে আগত দর্শনার্থীদেরকে ধারণা দেওয়া এবং তারা যেন নির্দ্বিধায় পুলিশি সেবা চাইতে পারেন- মূলত এই উদ্দেশ্যেই ঘোষণাটি দেওয়া। সময়ের পরিক্রমায় এরকম আরও জনবান্ধব উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে মর্মেও জানান তিনি।
পুলিশে পরিবর্তনের ধারা সূচিত করার লক্ষ্য নিয়েই এই সার্ভিসে এসেছেন জানিয়ে এএসপি আনোয়ার আরও বলেন, “আমি স্বপ্ন দেখি, উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশ পুলিশও একদিন দেশবাসীর কাছে সবচেয়ে বেশি শ্রদ্ধা ও সম্মান পাওয়া একটা সার্ভিসে পরিণত হবে।”
দুর্নীতি ও জনভোগান্তি প্রতিরোধে রাঙ্গুনিয়া সার্কেল এএসপি’র এই ব্যতক্রমী উদ্যোগ এবং কার্যালয়ে এমন ঘোষণাপত্র ঝুলিয়ে দেওয়ার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষও।
এ প্রসঙ্গে রাউজানের পাহাড়তলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রোকন উদ্দিন বলেন, যোগদানের পর অল্প সময়ের মধ্যেই এএসপি আনোয়ার শামীম একজন সৎ পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিজের পরিচয় তুলে ধরেছেন। টাকা নেওয়া তো দূরের কথা, এখন পর্যন্ত তিনি কারও কাছ থেকে চা-নাস্তা খেয়েছেন- এমন কথাও কোনওদিন শুনি নাই। সব জায়গায় তার মতো অফিসার থাকলে পুলিশ জনগণের প্রকৃত আস্থা ও বিশ্বাসের ঠিকানায় পরিণত হতে পারতো।