বাংলাদেশকে আরও ৯৬ লাখ ফাইজারের টিকা উপহার দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উপহারের টিকার পরিমাণ ২ কোটি ৮০ লাখ ছাড়ালো। শনিবার মার্কিন দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তি মতে, এই অনুদান বাংলাদেশকে দেশব্যাপী সম্মুখসারির কর্মী ও প্রবীণ নাগরিকদের বুস্টার ডোজ টিকাদানে সক্ষম করে তুলবে। বাংলাদেশকে দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের কোভিড-১৯ সহায়তা এখন ১২১ মিলিয়ন ডলার বা ১,০৪০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের জনগণের জন্য আমেরিকান জনগণের উপহার এটি। এ প্রসঙ্গে ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার বলেন, ‘বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে গত তিন বছরে কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারার যে গর্ব; অন্য কোনো কিছুতেই আমি সেটা খুঁজে পাই না। আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আমেরিকান জনগণ তাদের উদার ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের জন্য আরও ৯৬ লাখ টিকা ডোজ উপহার দিয়েছে। ফলে, এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ২ কোটি ৮০ লাখ ডোজেরও বেশি টিকা বিনামূল্যে প্রদান করেছে, এবং আরও টিকার ডোজ আসার পথে রয়েছে। আমরা বীর বাংলাদেশি স্বাস্থ্যসেবাদানকারীদের ও আমাদের অংশীদারদের অভিবাদন জানাই ও তাদের সঙ্গেই আছি, কারণ আমরা যৌথভাবে আমাদের উভয় মহান দেশের জনগণের সুস্বাস্থ্য ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের এই ফাইজারের টিকা অনুদান ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী শত কোটি টিকা ডোজ পৌঁছে দেয়ার মাধ্যমে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেয়ার প্রতিশ্রুতির অংশ। টিকা অনুদান দেয়া ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম প্রচারাভিযানে সহায়তা করার পাশাপাশি এই কার্যক্রমকে জোরদার করতে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্র টিকার সঠিক ব্যবস্থাপনা ও সঠিক পদ্ধতিতে টিকাদান বিষয়ে ৭,০০০ এরও বেশি বাংলাদেশি স্বাস্থ্যসেবাদানকারীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র কোভিড সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন ও মানবিক সহায়তা হিসেবে ইউএসএআইডি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এর মাধ্যমে ১২১ মিলিয়ন ডলার বা ১,০৪০ কোটি টাকারও বেশি অনুদান দিয়েছে। এই সহায়তা মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে এবং কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা পেতে সহায়তা করার পাশাপাশি রোগের পরীক্ষা করা ও মনিটরিংয়ের সামর্থ্য জোরদার করেছে, রোগী ব্যবস্থাপনা ও সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের উপায়গুলো শক্তিশালী করেছে এবং সরবরাহ ব্যবস্থা ও লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি উন্নত করেছে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা সম্মুখসারির কর্মীদের সুরক্ষিত করেছে এবং জনগণের মধ্যে সংক্রমণ থেকে নিজেদেরকে আরও ভালোভাবে রক্ষা করা সংক্রান্ত জ্ঞান বাড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী কোভ্যাক্স প্রচেষ্টাকে সহায়তা করতে ৪ বিলিয়ন ডলার বা ৩৪ হাজার কোটি টাকা সহায়তা করেছে। যার মধ্যে আল্ট্রা-কোল্ড চেইন পদ্ধতিতে কোভিড টিকা সংরক্ষণ, পরিবহন, নিরাপদ ব্যবস্থাপনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ টিকার ন্যায়সঙ্গত প্রবেশগম্যতা তৈরিতে বিশ্বের বৃহত্তম দাতা দেশে পরিণত হয়েছে।