ইংরেজি মাধ্যম স্কুল স্কলাস্টিকার ক্যারিয়ার গাইডেন্স কাউন্সিলর ইভানা লায়লা চৌধুরীর (৩২) মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ মাহমুদ হাসানসহ দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে শনিবার সন্ধ্যায় মামলাটি দায়ের করেছে ইভানার পরিবার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার
ইভানার বাবা আমান উল্লাহ চৌধুরী শাহবাগ থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ৪১। মামলার অপর আসামি ইমপালস হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক মুজিবুল হক মোল্লা।
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদার বলেন, ‘গতকাল ফিরে গেলেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা ও পরামর্শ অনুযায়ী আজ তাদের মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘৩০৬ ও ১০৯ ধারায় দুইজনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় দুইজনকে আসামি করেছেন বাদী। এ বিষয়ে তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও ইভানার বাবার মামলা নেয়নি শাহবাগ থানা পুলিশ। এ ঘটনায় আগে দায়ের হওয়া অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে বাবার দেওয়া অভিযোগ তদন্ত করবে পুলিশ- এমনটি জানিয়ে তাকে বিদায় করে দেয়।
এ বিষয়ে শুক্রবার রমনা জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদ বলেন, ‘ইভানার মৃত্যুর বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। সেটি ধরেই আমরা তদন্ত করছি। নতুন মামলার আবেদনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। অপমৃত্যুর মামলাটি অধিক গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপমৃত্যুর মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর নতুন মামলা দায়ের হবে।’
গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ৯৯৯ এর মাধ্যমে খবর পেয়ে নবাব হাবিবুল্লাহ রোডের সাকুরা গলিতে দুই ভবনের মাঝখান থেকে ইভানার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
শাহবাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদার তখন জানান, পরীবাগে নবাব হাবিবুল্লাহ রোডের ২/ক/১৪ নম্বর ৯ তলা ভবনের পঞ্চম তলায় থাকতেন ইভানা। সেখানে দেখা যায়, ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েছেন তিনি। সেদিন রাতেই শাহবাগ থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন তার চাচাতো ভাই এএসএম মাহাবুব উল্লাহ চৌধুরী।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ইভানার পরিবার সূত্রে জানা যায়, ইভানার শ্বশুর ইসমাইল হোসেন একজন অবসরপ্রাপ্ত সচিব। নিহতের স্বামী আবদুল্লাহ মাহমুদ হাসান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। ইভানার সঙ্গে ২০১১ সালে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। এই দম্পতির দুটি ছেলে রয়েছে।
ইভানার পরিচিত ও স্বজনদের দাবি, তার স্বামী আব্দুল্লাহ মাহমুদ হাসান ওরফে রুম্মানের আচরণ সন্দেহজনক। বিয়ের পর থেকেই ইভানার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাকে প্ররোচনা দিয়ে আত্মহত্যায় বাধ্য করা হয়েছে, যা হত্যার শামিল। ঘটনার দিনও ঝগড়া হয়েছে তাদের। তার আগের দিনও ঝগড়ার সূত্র ধরে নিজের হাত নিজেই কেটেছিলেন ইভানা।