ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে জরিপে এগিয়ে আছেন আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ইব্রাহিম রাইসি।আগামী শুক্রবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ আলোচিত নির্বাচন। এটি দেশটির ১৩ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। চার বছর আগের নির্বাচনের পর থেকে ইরানে কার্যত অনেক কিছুই বদলে গেছে। বিশেষ কিছু কারণে দেশ-বিদেশে ইরানের নাগরিকদের জন্য এবারের নির্বাচনকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। খবর বিবিসি ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
২০১৭ সালের সর্বশেষ নির্বাচনের পর থেকে বেশ কিছু ঘটনা দেশটির রাজনীতিকেই পাল্টে দিয়েছে। এর মধ্যে আছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের রক্তক্ষয়ী দমন, রাজনৈতিক ও সামাজিককর্মীদের গ্রেফতার, রাজনৈতিক বন্দিদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া, রেভুল্যুশনারি গার্ড সদস্যদের ইউক্রেনের বিমান গুলি করে ভূপাতিত করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকট।
তাই ইরানের সাধারণ মানুষের মধ্যে তৈরি হওয়া প্রতিক্রিয়ার উল্লেখযোগ্য প্রভাব থাকবে এবারের নির্বাচনে। অসন্তোষের কারণে ভোটারের কম উপস্থিতি সম্ভবত একটি বড় ধাক্কা হতে পারে। আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জনগণকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, যারা জনগণকে ভোটদানে বিরত থাকার আহ্বান জানায়, তারা দেশের কল্যাণ চান না। তিনি জনগণকে উদ্দেশ করে বলেন, যারা বলে বেড়ায় ভোট দিয়ে লাভ নেই, তাদের কথা শুনবেন না।
সাম্প্রতিক দুটি জরিপ বলছে— এবার ভোট দেওয়ার হার হবে খুবই কম। এর মধ্যে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান ব্রডকাস্টিংয়ের জরিপ বলছে— ভোটার উপস্থিতি হতে পারে ৫০ শতাংশেরও কম। আর হার্ডলাইনার হিসেবে পরিচিত ফার্স নিউজ এজেন্সির জরিপে বলা হয়েছে— ৫৩ শতাংশ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন এ নির্বাচনে। ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর, ইরানের বড় সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার একক ক্ষমতা দেশটির সর্বোচ্চ নেতার হাতে। তাই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও খামেনির প্রভাব থাকে অনেক বেশি। এবারের নির্বাচনে সর্বোচ্চ নেতার সমর্থন পাচ্ছেন, তারই ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ইব্রাহিম রাইসি।
কট্টর রক্ষণশীল পশ্চিমাবিরোধী এ নেতার জয় নিশ্চিত করতে এরই মধ্যে বাতিল করা হয়েছে সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনেজাদ কিংবা সাবেক স্পিকার আলি লারিজানির মতো শক্তিশালী নেতার প্রার্থিতা। ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান ইব্রাহিম রাইসিকে এবারের সবচেয়ে শক্ত প্রার্থী বলে মনে করা হচ্ছে এবং কিছু জরিপে উঠে এসেছে যে কট্টরপন্থিদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে জনপ্রিয়। এবার ইরানের নির্বাচনে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে যাচ্ছে দেশটির অর্থনীতি এবং সব প্রার্থীর এজেন্ডাতেই তাই এটিই প্রধান বিষয়। অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর থেকে এবারই সবচেয়ে বেশি সংকট মোকাবিলা করছে দেশটি।