পোশাক শ্রমিকদের ছুটি বাতিল নয়, বিকল্প ছুটির ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। সংগঠনটি বলেছে, অবিলম্বে পরিবহন, গার্মেন্টস, পর্যটন, রি-রোলিং, দোকান-কর্মচারীসহ প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের বেতন-ভাতার ব্যবস্থা ও ঈদের আগেই অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মহীন শ্রমিকদের খাদ্য ও নগদ সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, শ্রমিক-কর্মচারীরা ২০ রোজার মধ্যে পূর্ণ ঈদ বোনাস এবং এপ্রিল মাসের বেতনসহ বকেয়া পাওনাদি পরিশোধের দাবি করেছিল। শ্রমিক-কর্মচারীদের দাবিকে উপেক্ষা করে সরকারের শ্রম মন্ত্রণালয় ১০ মের মধ্যে সব কল-কারখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের বেতন ভাতা পরিশোধের নির্দেশনা দেয়। সরকারের এই নির্দেশনার প্রেক্ষিতে আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলাম, করোনার অজুহাত আর ঈদের নিকটবর্তীতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন শিল্প মালিক শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করতে পারে। মাত্র দুই বা তিন দিন পর। অথচ ঈদ রি-রোলিং, পর্যটন, রেস্তোরাঁ-সুইটমিট, দোকান কর্মচারীসহ প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন খাতে কাজ করা লাখ লাখ শ্রমিক-কর্মচারীর বেতন ভাতা এখনও পরিশোধ করা হয়নি। কোথাও কোথাও প্রায় সারা বছর পুরোদমে উৎপাদন চালু থাকলেও করোনার অজুহাত তুলে ঈদ বোনাস দিতে অস্বীকার করা হয়েছে। এমনকি রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা এখনও পরিশোধ হয়নি।
বক্তারা দাবি জানিয়ে বলেন, যেসব মালিক সরকার নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে পূর্ণ পাওনা পরিশোধ করেনি, তাদের শাস্তি এবং তাদের কাছ থেকে শ্রমিকের ন্যায্য পাওনা অবিলম্বে আদায় করে দিতে হবে।
বক্তারা বলেন, গণপরিবহন, পর্যটন শ্রমিক, রাইডার, হালকা যানবাহন চালক, নির্মাণ শ্রমিক, রিকশা-ভ্যান চালক, হকার, পানুকা শ্রমিক, দিনমজুর, গৃহশ্রমিকসহ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কোটি কোটি শ্রমজীবী মানুষ করোনাকালে উপার্জনহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। নিত্যদিনের ক্ষুধা নিবারণের খাদ্য জোগাড় করাই যখন কঠিন, সেই সময় ঈদ উৎসব তাদের যন্ত্রণাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। সরকার বিভিন্নভাবে কর্মহীন অসহায় মানুষদের সহযোগিতার কথা প্রচার করলেও বণ্টন প্রক্রিয়ায় ভোটের হিসাব-নিকাশ, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতির কারণে প্রকৃত ভুক্তভোগী শ্রমিকের হাতে সরকারি সহায়তা পৌঁছায়নি। আমরা প্রকৃত ভুক্তভোগীদের সরকারি সহায়তা নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সহ সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, কোষাধ্যক্ষ জুলফিকার আলী, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. বিমল চন্দ্র সাহা, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, বাংলাদেশ ট্যুরিজম হোটেলস ওয়ার্কার্স এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের আহ্বায়ক রাশেদুর রহমান রাশেদ প্রমুখ।