সরকার দেশে ‘ছদ্মবেশী’ একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে গণতন্ত্রকে লুট করেছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার দুপুরে জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পনের পরে সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনটির সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীনসহ ১০/১৫ জন নেতা-কর্মী নিয়ে দুপুর ২টায় বিএনপি মহাসচিব শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পন করেন। সকাল থেকে চন্দ্রিমা উদ্যানে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ কিছু নেতৃবৃন্দ ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেয়নি পুলিশ। বিএনপি মহাসচিবও চন্দ্রিমা উদ্যানের মূল প্রবেশ পথ থেকে হেটে সমাধিস্থলে আসেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে কিন্তু প্রকৃত পক্ষে তারা কখনোই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করেনি। এই দলটি যারা নিজেদেরকে মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ধারক বলে মনে করে, যারা সারাক্ষণ মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে তারাই আজকে সবচেয়ে বেশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করেছে। জনগনের যে আশা-আকাংখা ছিলো সেই আশা-আকাংখাকে ধুলিসাত করে দিয়েছে। যে গণতন্ত্রের জন্য আমরা সবাই লড়াই করেছিলাম, সংগ্রাম করেছিলাম তাকে তারা হরণ করেছে, ধবংস করেছে এবং লুটে নিয়ে গেছে।
আজকে যে সংবিধান ১৯৭২ সালে প্রণয়ন করা হয়েছিলো সেই সংবিধানকে তারা কেটে-ছুঁড়ে তচনচ করে দিয়ে ছদ্মবেশি একটা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। এই দলটি ১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলো এবং আবারো এখন তারা ছদ্মবেশী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে।
ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগের হাতে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধার প্রাণ গেছে ১৯৭২ সালের পরে। যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীরউত্তম সাহেবের নামে তারা মিথ্যাচার করছে, অপপ্রচার করছে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামে তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত আকাংখাকে তারা পদদলিত করছে। আমরা আজকে আহবান জানাচ্ছি যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধবংস না করে সত্যিকার অর্থেই দেশে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্যে অবিলম্বে তাদের পদত্যাগ করে এখানে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায়, নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন কালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে জনগনের একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করার ব্যবস্থা নিন।
মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতা-কর্মীদের প্রবেশে বাঁধা প্রদানের নিন্দা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, রনাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধ দল। দুর্ভাগ্য আমাদের আজকে যারা এখানে মুক্তিযোদ্ধা আছেন তারা অত্যন্ত পরিচিত মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশমাতৃকার স্বাধীনতার জন্য তারা জীবন বাজী রেখে যুদ্ধ করেছিলেন। সেই মুক্তিযোদ্ধাদের, সেই মুক্তিযোদ্ধা দলকে আজকে এখানে আসতে বাঁধা দেয়া হয়েছে, আজকে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। আমরা যারা বয়োঃজ্যেষ্ঠ মানুষ আছি আমরা ইতিপূর্বে সবসময় গাড়ি মাজারের কাছে নিয়ে এসে আমরা আসতাম সেটাও এবার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমরা এই ঘটনার জন্য তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।