শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

এবার বিএনপি জোট ছাড়ল খেলাফত মজলিস

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত সময় : শুক্রবার, ১ অক্টোবর, ২০২১
  • ২১৮ পাঠক পড়েছে

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ছেড়েছে শরিক দল খেলাফত মজলিস। শুক্রবার বিকালে এক প্রেস ব্রিফিং থেকে জোট ছাড়ার ঘোষণা দেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন।

এর আগে দুপুরে খেলাফত মজলিস তাদের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করে। বৈঠকে প্রায় দুই শতাধিক সদস্য অংশ নেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, খেলাফত মজলিস একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতির প্রয়োজনে সদা সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। নিয়মতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলন-সংগ্রামে খেলাফত মজলিস বিশ্বাসী। একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন হিসেবে দীর্ঘ তিন দশকেরও অধিক সময় রাজনৈতিক অঙ্গনে দেশ, জাতি, ইসলাম ও জনগণের পক্ষে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে আসছে। খেলাফত মজলিস মনে করে, এ দেশের প্রতিটি নাগরিকের রাজনৈতিক মতাদর্শ লালন-পালন করার অধিকার আছে, যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বীকৃত।

মজলিসের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট নিষ্ক্রিয় ও অকার্যকর। আর এই জোটে থাকায় রাজনৈতিক মূল্যায়নও পায়নি মজলিস। সর্বশেষ হেফাজতের নেতাকর্মীদের ধরপাকড়ের ঘটনায় দলটির মহাসচিব অধ্যাপক আহমদ আবদুল কাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি এখনো কারাগারে রয়েছেন। তাই খেলাফত মজলিসের জোট ত্যাগ করার পেছনে রাজনৈতিক কারণই প্রধান।

নেতারা জানান, রাষ্ট্রীয় চাপ ও আন্তর্জাতিক বাস্তবতায় ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিয়ে নতুন আঙ্গিকে চিন্তা করার প্রয়োজন রয়েছে। একই সঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখেও পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনার চিন্তাভাবনা চলছে মজলিসে।

এর আগে জোটের শরিক দলের যথাযথ মূল্যায়ন না করাসহ কয়েকটি কারণ দেখিয়ে গত ১৪ জুলাই বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট ছেড়ে দেয় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম।

প্রসঙ্গত ১৯৯৯ সালের ৬ জানুয়ারি জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ঐক্যজোটকে সঙ্গে নিয়ে ‘চারদলীয় জোট’ গঠন করেছিল বিএনপি। পরে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি বেরিয়ে গেলে যুক্ত হয় নাজিউর রহমান মঞ্জুর বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)। পরে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল নতুন ১২টি দলের সংযুক্তির মাধ্যমে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে থাকা চারদলীয় জোট কলেবরে বেড়ে দাঁড়ায় ১৮-দলীয় জোটে। এর পর জোটের পরিধি বেড়ে দাঁড়ায় ২০ দলে। তবে ২০-দলীয় জোট থেকে ইসলামী ঐক্যজোট, এনপিপি, ন্যাপ ও এনডিপি বেরিয়ে গেলেও একই নামে এসব দলের একাংশকে জোটে রেখে দেয় বিএনপি। জোট ছেড়ে যায় আন্দালিভ রহমান পার্থের বিজেপিও। সর্বশেষ জমিয়ত বেরিয়ে গেলেও একই নামে আরেকটি অংশ রয়েছে জোটে।

২০০১ সালের পহেলা অক্টোবর ছিলো ১৯৭১ এর ২৫ মার্চের প্রতিচ্ছবিঃ বাহাউদ্দিন নাছিম

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, ২০০১ সালের পহেলা অক্টোবর বিএনপি-জামায়াত হাওয়া ভবনের নীলনকশায় কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচনে জিতে তান্ডব শুরু করেছিলো। আজ সেই পহেলা অক্টোবর। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে বাঙালির উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, ২০০১ সালের পহেলা অক্টোবর বিএনপি জামাত একই কায়দায় নিরীহ বাঙালির উপর হামলা করেছিলো। এদিন তারা অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজ, নারী নির্যাতন, হত্যার মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। সেদিন যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো, নির্যাতিত হয়েছিলো, জীবন দিয়েছিল তাদের প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা জানাই।

আজ পহেলা অক্টোবর শুক্রবার সকালে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ২০০১ সালের পহেলা অক্টোবর বিএনপি জামাত ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে অসংখ্য মনুষকে হত্যা করেছিলো, সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য করেছিলো। তারা হত্যা, লুন্ঠন, ধর্ষণে মেতে উঠেছিলো। পরবর্তীতে তা নিয়ে তদন্ত কমিশন গঠিত হয়েছিল। সেই কমিশনের রিপোর্ট অনুসারে সকল অপকর্মকারীদের কঠোর বিচারের দাবি জানাই।

তিনি বলেন, ২০০১ সালের এই পহেলা অক্টোবরের পরই কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী নিজামী, সাঈদী, আলী আহসান মুজাহিদদের নিয়ে তারা সরকার গঠন করেছিলো। এই স্বাধীনতা বিরোধীদের তারা পতাকা দিয়েছিলো, মন্ত্রী করেছিলো। যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীকে করেছিলো কৃষিমন্ত্রী। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা বিরোধীদের নিয়ে গঠন করেছিলো বিএনপি আর এই স্বাধীনতা বিরোধীদের পতাকা তুলে দিয়েছিলো বেগম জিয়া। তারা দেশকে ধ্বংসের চরম জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল। আমরা সেই বাংলাদেশে আর ফিরে যেতে চাই না।

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোনার বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। এসডিজি অর্জন করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে মুকুট মণি উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ হবে উন্নত সম্বৃদ্ধ শান্তির স্বপ্নের বাংলাদেশ।

কৃষিবিদদের এই নেতা বলেন, ঐক্যই শক্তি। ঐক্য পারে সম্বৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিতে। সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কৃষিবিদদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ, জাতি, কৃষক ও কৃষিবিদদের উন্নয়নে একাসথে কাজ করতে হবে।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য প্রফেসর মো. শাদাত উল্লার মৃত্যুতে আয়োজিত স্বরণ সভায় বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, শাদাত উল্লা স্যার রাজনীতিবিদ ছিলেন না তবে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন। উনি নেতা ছিলেন না তবে শিক্ষক হিসেবে নেতার চেয়েও অনেক গুরু দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ছিলেন ছাত্রদের জন্য আস্থার জায়গা। আমার তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়ার সভাপতিত্ব স্বরণ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, কৃষকলীগ সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম মাসুদুর রহমান মিঠু, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2020 । দৈনিক আজকের সংবাদ
Design and Developed by ThemesBazar.Com
SheraWeb.Com_2580