সোমবার জামিন মেলেনি শাহরুখ পুত্র আরিয়ান খানসহ আরবাজ মার্চেন্ট ও মুনমুন ধামেচা। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে আরিয়ানের কাছের বন্ধু শ্রেয়াস নায়ারকে। এদিন তাদের আদালতে পেশ করা হলে আগামী ৭ অক্টোবর অবধি আরিয়ান খান সহ তার দুই বন্ধুকে এনসিবি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।
আরিয়ান ও আরবাজকে জেরা করে মিলতে পারে আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের হদিস এমনটাই মনে করে এনসিবি। সেই কারণেই আরও বেশিদিন তাদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল এনসিবি।
সোমবার রাতেই আরবাজকে নিয়ে মুম্বাইয়ের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে এনসিবি। ইতিমধ্যেই এই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে মোট ১১ জনকে। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার আরিয়ান খানকে সঙ্গে নিয়ে মুম্বাইয়ের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালাবে এনসিবি। এমনকি তল্লাশি হতে পারে শাহরুখ খানের বাংলো মান্নাতেও। আইনি মতেই যেকোনও অভিযুক্তের বাড়ি তল্লাশি চালাতে পারে এনসিবি। সেই সূত্রেই আজ মান্নাতে হানা দিতে পারে এনসিবি কর্তারা।
ইতিমধ্যেই তার আইনজীবী জানিয়েছেন যে আরিয়ানের কাছ থেকে কোনরকমের মাদকই পায়নি এনসিবি কর্তারা। জেরার মুখে আরিয়ান কান্নায় ভেঙে পড়লেও এনসিবিকে সবরকমের সাহায্য করছে সে। এনসিবি জোনাল ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ে জানিয়েছেন যে, শনিবার রেভ পার্টি থেকে আটক হওয়া আটজনের মধ্যে থেকে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও মুম্বাইয়ের এই মামলায় আরও অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে এর থেকে বেশি তথ্য শেয়ার করতে নারাজ তিনি।
সোমবার ছেলের শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন গৌরী খান। রবিবার একদিনের জন্য আরিয়ানকে এনসিবি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সোমবার আদালতের কাছে জিজ্ঞাসাবাদের কারণেই তিন অভিযুক্তকে ফের আগামী ১১ অক্টোবর অবধি হেফাজতে রাখার আবেদন জানায় এনসিবি। এদিন এনসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয় যে তদন্তের জন্যই আরিয়ান সহ তিনজনকে হেফাজতে রাখা জরুরি।
আরিয়ান খানের ফোন থেকে তার বিরুদ্ধে জোরালো প্রামাণ্য নথিও পাওয়া গেছে বলে আদালতে জানায়। আরিয়ানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাদকচক্রের যোগ রয়েছে বলেও দাবি করে এনসিবি। পাশাপাশি এদিন আরিয়ানের জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে। তবে সেই আবেদন নস্যাৎ করে আগামী ৭ অক্টোবর অবধি আরিয়ানকে এনসিবি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
জুতো থেকে শুরু করে চোখের লেন্সের বাক্স, এমনকি মেয়েদের অন্তর্বাসেও লুকানো ছিল মাদক। আরিয়ানের বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে ১৩ গ্রাম কোকেন, ৫ গ্রাম এমডি, ২১ গ্রাম চরস, ও এমডিএমএ’র ২২ টি পিল এবং নগদ এক লক্ষ তেত্রিশ হাজার টাকা। একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছে আরিয়ানের বিরুদ্ধে। নারকোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস ১৯৮৫ আইনের ৮সি, ২৭, ২২ নম্বর ধারা, এছাড়া এমডিএমএ ও এক্সট্যাসি আইনের অন্তর্গত ১৪(১), ১৪ (বি), ২০(বি) ধারায় মামলা করা হয়েছে আরিয়ানের বিরুদ্ধে।
শনিবার রাতে এক মাদক পার্টি থেকে শাহরুখ খানের পুত্র আরিয়ান খান সহ আটজনকে আটক করে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর কর্তারা। আরিয়ানের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য সেবন ও মাদক কেনা বেচার গুরুতর অভিযোগ এনেছে এনসিবি। দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর বাজেয়াপ্ত করা হয় আরিয়ানের ফোন। খতিয়ে দেখা হয়, শেষ কয়েকদিন কার কার সঙ্গে ফোনে ও হোয়াটস অ্যাপে কথা বলেছেন আরিয়ান। এরপরই আরিয়ান খান, আরবাজ মার্চেন্ট ও মুনমুন ধামেচা, নুপূর সারিকা, ইশমিত সিং, মোহক জয়সওয়াল, বিক্রান্ত চোকার, গোমিত চোপড়াকে গ্রেফতার করে এনসিবি। রবিবার আদালতে আরিয়ানের আইনজীবী সতীশ মানশিণ্ডে জানান যে এই পার্টিতে যাওয়ার টিকিটও ছিল না আরিয়ানের কাছে, তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এমনকি আরিয়ানের কাছে কোনও মাদকদ্রব্য ছিল না। তাই তাকে গ্রেফতার করাই ভুল, বলে দাবি করেন আইনজীবী। সূত্র: জিনিউজ