সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

ওমিক্রনকে মৃদু ভাবার কারণ নেই: ডব্লিউএইচও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময় : শুক্রবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২২
  • ২১৩ পাঠক পড়েছে

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনকে মৃদু হিসেবে ভাবার কোনো কারণ নেই বলে সতর্ক করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির প্রধান ড. তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই সতর্কবার্তা দেন।

তিনি বলেন, ‘ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রনকে কম মারাত্মক দেখাচ্ছে, বিশেষ করে যারা টিকা নিয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে। এর মানে এই নয় যে একে মৃদু হিসেবে তালিকাভুক্ত করা উচিত। আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোর মতো ওমিক্রনও মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করাচ্ছে, মানুষ মারছে। প্রকৃতপক্ষে, রোগীর সুনামি এত বিশাল ও দ্রুতগতিতে হচ্ছে যে এটি বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর দুর্বিষহ চাপ সৃষ্টি করছে।’

ডব্লিউএইচও প্রধান বলেন, বিপুল সংখ্যক মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় তা বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর ভয়াবহ চাপ ফেলছে। খবর বিবিসির।

সংবাদ সম্মেলনে ড. তেদ্রোস দরিদ্র দেশগুলোর জনগোষ্ঠীকে টিকাদান নিশ্চিত করতে অন্যদের এগিয়ে আসতে আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চলতি বছরের জুলাইয়ের মধ্যে বিশ্বের ৭০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে পূর্ণাঙ্গ টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল; কিন্তু এখন যেভাবে টিকাদান চলছে তাতে ১০৯টি দেশ তাদের ‘টার্গেট’ পূরণ করতে পারবে না, বলছেন ডব্লিউিএইচও প্রধান।

গত বছর তিনি বলেছিলেন, পশ্চিমা দেশগুলো তাদের বুস্টার কর্মসূচির জন্য মজুদ না করলে ২০২২ সালে সব প্রাপ্তবয়স্ককে টিকা দেওয়ার মতো যথেষ্ট ডোজ বিশ্বের হাতে থাকবে।

জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা ডব্লিউএইচওর হিসাব অনুযায়ী, গত সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে কোভিড রোগী আগের সপ্তাহের তুলনায় ৭১ শতাংশ বেড়েছে, আমেরিকার দুই মহাদেশে রোগী এক সপ্তাহে দ্বিগুণ হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে এখন গুরুতর অসুস্থদের ৯০ শতাংশই টিকা না নেওয়া, বলছে তারা। করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরন ওমিক্রন এমনকি টিকা নেওয়া ব্যক্তিদেরও আক্রান্ত করতে পারে; তবে তারপরও টিকার গুরুত্ব অপরিসীম, কেননা তা নেওয়া থাকলে গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি কমে, হাসপাতালে ভর্তির হাত থেকে বাঁচা যায়।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে এক লাখ ৭৯ হাজার ৭৫৬ জন নতুন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ২৩১ জনের।

ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশের সব হাসপাতালকে জানুয়ারি এখন পর্যন্ত দেখা সবচেয়ে ভয়াবহ মাস হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন। বৃহস্পতিবার ফ্রান্স ২ লাখ ৬১ হাজার নতুন কোভিড রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় এক মাসের বেশি আগে ওমিক্রন ধরন শনাক্ত হয়। এরপর এটি বিশ্বজুড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

ওমিক্রন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিউনলজিস্ট মনিকা গান্ধী বলেন, ‘আমরা সম্পূর্ণরূপে একটি ভিন্ন পর্যায়ে রয়েছি। হয়তো ভাইরাসটি সর্বদাই আমাদের সঙ্গে থাকবে। তবে নতুন নতুন ধরন বেশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করবে। আমার প্রত্যাশা, এটা মহামারির অবসান ঘটাবে।’

প্রথমে ওমিক্রন বেশি মাত্রায় মিউটেশন হওয়ায় উদ্বেগ তৈরি করেছিল। গবেষণায় দেখা গেছে, এ ধরন টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের সহজে আক্রমণ করতে পারে। তবে এর বিরুদ্ধে আগে টিকা নেওয়া ও আক্রান্ত ব্যক্তিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দারুণভাবে প্রতিরোধ করতে পারে।

বাংলাদেশে ২০ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। তারা সবাই রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা (জিআইএসএআইডি) ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

ওমিক্রন ঠেকাতে সারা দেশে ১৫ দফা নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ।

করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় গত মঙ্গলবার সাত দিনের মধ্যে নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপের সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, যেখানে যানবাহনে অর্ধেক আসনে যাত্রী পরিবহন এবং সামাজিক অনুষ্ঠান সীমিত করার কথাও রয়েছে। পাশাপাশি পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টার ও রেস্তোরাঁয় মানুষের উপস্থিতি ধারণ ক্ষমতার অর্ধেকের মধ্যে সীমিত রাখতে বলা হয়েছে।

কিছুদিনের মধ্যেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিধিনিষেধ উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপন জারি করবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন মিঞা।

 

 

 

 

 

নিউজটি শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2020 । দৈনিক আজকের সংবাদ
Design and Developed by ThemesBazar.Com
SheraWeb.Com_2580