কক্সবাজার- চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা বেড়েই চলছে। সাথে বেড়েছে আহতের ঘটনাও। ফিটনেসহীন যানবাহন, আনাড়ি চালক ও ট্রাফিক আইন না মানার কারণে শুধু দূরপাল্লায় নয়, মহাসড়কেও একের পর এক দুর্ঘটনায় নিভে যাচ্ছে তরতাজা প্রাণ। ৮ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার ভোর ৫ টায় কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়ার ডুলাহাজারা মালুমঘাট খ্রিস্টান মেমোরিয়াল হাসপাতাল সংলগ্ন হাসিনা পাড়ায় দ্রুতগামী পিকআপ ভ্যানের চাপায় ৪ ভাই নিহত হয়েছেন।
চকরিয়ার মালুমঘাটে পূজা শেষে মহাসড়ক পার হতে গিয়ে আহত হয়েছে আরও ৩ ভাই, একবোন। নিহতরা হলেন, অনুপম শীল (৪৭), নিরুপম সুশীল (৪৫), দীপক সুশীল (৪০), ও চম্পক সুশীল (৩০)।আহতরা হলেন, সরণ সুশীল, রক্কিত সুশিল, প্লাবন ও হীরা সুশিল। তারা সকলেই ডুলাহাজার হিন্দু পাড়া এলাকার একই পরিবারের মৃত সুরেশ চন্দ্র সুশীলের ছেলে ও মেয়ে। ডুলহাজারা ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর বলেন, নিহতদের বাবা সুরেশ বিগত ১০ দিন আগে পরলোক গমন করে। এই কারণে সনাতন ধর্মমতে সুরেশের ৭ ছেলে ও এক মেয়ে ভোর বেলায় ক্ষৌর কর্ম (মাথার চুল ফেলা দেয়া) সম্পন্ন করতে হাসিনাপাড়ার তিনরাস্তারস্থ স্থানীয় মন্দিরে যান। মন্দির থেকে ক্ষৌর কর্ম শেষে বাড়ি ফেরার পথে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। তাদের সৎকার করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
চকরিয়ার মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. সাফায়েত হোসেন জানান, পারিবারিক পূজো দিয়ে কক্সবাজার- চট্টগ্রাম মহাসড়ক পার হওয়ার সময় কক্সবাজার মুখী একটি দ্রুতগামী পিকআপ ভ্যান ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই ৪ ভাই নিহত হয়েছে। বাকি ৪ জনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ঘাতক পিকআপটি জব্দ ও চালককে আটক করার চেষ্টা চলছে। ৬ ফেব্রুয়ারী রবিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহসড়কের চকরিয়া উপজেলা খুটাখালী ইউনিয়নের মেধাকচ্ছপিয়া এলাকায় শ্যামলী যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক ও লেগুনার ত্রিমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এসময় চালক-হেলপারসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। গাড়ির দুটিতে থাকা অন্তত ৩০ যাত্রী আহত হন। আহতদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। আহতদের চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ দূর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- শ্যামলী পরিবহনের চালক ও মাদারিপুরের বাসিন্দা ইছহাক মাতব্বরের ছেলে বজলুল হক (৪০), একই গাড়ির হেলপার ও ঢাকার ধামরাই এর বাসিন্দা সেকিম আলীর ছেলে মো. আলাল (২৮) ও কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ির মাওলানা আহসান উল্লাহর ছেলে মাওলানা মো. খালেদ (৩৫)।
গুরুতর আহতদের মধ্যে আবদুল্লাহ শেখ (২৬), নাজেম উদ্দিন (৪৯), এমডি ফারুক (৫৫), শাহ আলম (৪০), শামজিল (১৮) ও জিয়াউদ্দিন (২৩) কে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) এমএম রাকিব উর রাজ বলেন, দুর্ঘটনা কমাতে চালক-যাত্রী সবার সচেতনতা দরকার। চালকরা দেখে শুনে চালালে আর যাত্রীরা স্পিডে চালাতে উৎসাহ না দিলেই দুর্ঘটনা রোধ সম্ভব। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ এবং সচেতনতামূলক সভাও করা হয়েছে।