করোনায় কর্মহীন শ্রমিকদের খাদ্য, চিকিৎসা, অর্থ সহায়তা, রেশন, স্বল্পমূল্যে আবাসন ও সার্বজনীন পেনশন চালু করতে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ প্রদানের দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, করোনার সংক্রমণে সাধারণ জীবনযাত্রা যখন স্থবির সেই সময়ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শ্রমিকরা উৎপাদনের চাকা সচল রাখায় দুর্যোগকালীন সময়েও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, জিডিপি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালে মাথাপিছু আয় ছিল ১৯০৯ ডলার, যা গত দুই বছরে ৩১৮ ডলার বৃদ্ধি পেয়ে ২২২৭ ডলার হয়েছে। দেশের সম্পদ বৃদ্ধি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির কারিগর শ্রমিকদের আয় বৃদ্ধি পাওয়ার পরিবর্তে কমেছে কমপক্ষে ২০ শতাংশ। বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছে, আয় কমে যাওয়ায় প্রায় ৫২ শতাংশ পরিবার প্রতিদিনের খাদ্য ব্যয়ের পরিমাণ কমিয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংক বলছে, করোনায় বাংলাদেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা যাদের দৈনিক আয় ১.৯ ডলারের কম তাদের সংখ্যা ১২ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২২ শতাংশ হয়েছে। অর্থাৎ করোনাকালে দেশের সম্পদ বৃদ্ধির পাশাপাশি বৈষম্যের মাত্রাও বেড়েছে। কয়েক হাজার মানুষ কোটিপতি হওয়ার বিপরীতে কোটি কোটি মানুষ দরিদ্র থেকে অতি দরিদ্রে পরিণত হচ্ছে। এই শ্রমজীবী দরিদ্র মানুষ রাষ্ট্রের খরচের অধিকাংশ যোগান দেয়। গতবছর দেশের মোট রাজস্ব আয়ের ৫০ শতাংশের বেশি এসেছে ভ্যাট আর আমদানি শুল্ক থেকে। যার দায় চূড়ান্ত ভাবে ভোক্তা অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠ দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের ওপর পড়ে।
বক্তারা আরও বলেন, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমজীবীদের জন্য বিশেষত মোট শ্রম শক্তির ৮৫ শতাংশ পর্যটন হোটেল রেস্টুরেন্ট, নির্মাণ, তাঁত, পাদুকা, কুলি, পরিবহন, হালকা যানবাহন চালকসহ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক এবং বিদেশ প্রত্যাগত শ্রমিকদের জন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে কর্মসংস্থান, খাদ্য, চিকিৎসা অর্থ সহায়তার ব্যবস্থা করতে হবে।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সহ-সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, কোষাধ্যক্ষ জুলফিকার আলী, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিমল চন্দ্র সাহা প্রমুখ।