বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও পুনর্বিবেচনা করতে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। গাজীপুর নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাধারণ সদস্য পদ হারানোর পর শনিবার সকালে বোর্ডবাজার হারিকেন এলাকার নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন জাহাঙ্গীর।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র জাহাঙ্গীর কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় নেতাকর্মীরাও চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। মেয়র বলেন, আমার সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বুঝানো হয়েছে। ছাত্রলীগের মাধ্যমেই আমার রাজনীতি শুরু। আমাকে আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে বাঁচতে দিন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশ্যই পুনর্বিবেচনা করবেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘উনি চাইলে যে কোনো সময় ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলতে রাজি। আমার মা আমার অবিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমার প্রতিপক্ষরা আমাকে মারার ষড়যন্ত্র করেছে।’ তিনি বলেন, যারা ঘরে ঢুকে অডিও করে তাদের বিচার হয়নি। আমি ভুল করতে পারি, আমার ভুল হতে পারে। কিন্তু আমি কোনো পাপের সঙ্গে জড়িত নই।
সংবাদ সম্মেলনে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে মেয়র জাহাঙ্গীর বলেন, আমি আওয়ামী লীগের জন্য, বঙ্গবন্ধুর জন্য, আমার মা সমতুল্য প্রধানমন্ত্রীর জন্য জীবন দিতে রাজি, তবু মিথ্যা অপবাদ নিয়ে মরতে চাই না। বিশ্বমানবতার মা, আমার মায়ের কাছে বলতে চাই- আমার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে পুনর্বিবেচনা করুন। গত ২২ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের একটি ঘরোয়া আলোচনার রেকর্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর আওয়ামী লীগের একটি অংশ মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামে। এরপর গত ৩ অক্টোবর মেয়র জাহাঙ্গীরের ব্যাখ্যা চায় আওয়ামী লীগ। এতে তাকে ১৫ দিন সময় দেয়া হয়। ১৮ অক্টোবর সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই মেয়র তার ব্যাখ্যা দেন।
বঙ্গবন্ধু ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয় জাহাঙ্গীর আলমকে। সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সভায় উপস্থিত সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তার প্রাথমিক সদস্যপদও বাতিল করা হয়েছে।’ জাহাঙ্গীরের রাজনীতিতে হাতেখড়ি ছাত্রলীগের মাধ্যমে।ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এই ছাত্র সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সহসভাপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি।