কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে তিন আরোহীসহ একটি প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ঘটনাস্থলেই পাঁচজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে শোকের মাতম চলছে। নিহতরা হলেন, কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের রামদেবপুর গ্রামের ইউপি সদস্য সিদ্দিকুর রহমান খোকনের ছেলে শাহপরান তুষার (২২), একই এলাকার নরপাইয়া গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে শাকিল (২৩), ঝলম (দক্ষিণ) ইউনিয়নের চাঁপনী কেশতলা গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে রেজাউল করিম (২৩), যশোরের শার্শা উপজেলার ধান্যখোলা গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে নয়ন (২৪) এবং গাজীপুর সদর উপজেলার উত্তর খাইলকুর গ্রামের বাবুল হোসেনের ছেলে সাগর হোসেন (২৪)।
বুধবার দিবাগত রাত ১ টার দিকে মনোহরগঞ্জ শাহরাস্তি সড়কের চিতোষী (পূর্ব) ইউনিয়নের পূর্ব নরহ গ্রামের ডা.সালেহ আহমেদের বাড়ির পাশে মর্মান্তিক এই দূর্ঘটনা ঘটেছে। এলাকাবাসী জানান- দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। গাড়িটি খাদের পানিতে ডুবে যাওয়ায় ভেতরের কেউ বের হতে পারেনি। পরে গাড়ির কাঁচ ভেঙে তাদের উদ্ধার করা হলেও ততক্ষণে কেউ বেঁচে ছিলো না।
এদিকে দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে মনোহরগঞ্জের রামদেবপুর, নরপাইয়া এবং চাপনী কেশতলা গ্রামে নিহতদের বাড়িতে চলছে স্বজনদের শোকের মাতম। স্বজনদের কান্না আর আহাজারিতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কোনো ভাবেই যেন শান্তনা খুঁজে পাচ্ছেন না স্বজনেরা। পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় এলাকবাসী সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা শহরে সামাজিক অনুষ্ঠান শেষে মনোহরগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় যাচ্ছিল প্রাইভেটকার আরোহীরা।
শাহরাস্তি এলাকার ওই সড়ক দিয়ে যাওয়ার পথে পূর্ব নরহ গ্রামের ডা. সালেহ আহমেদের বাড়ির পাশে প্রাইভেটকারটি (ঢাকা মেট্রো-গ ৪৩-৩৭২১) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের ডোবায় পড়ে যায়। দূর্ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ সদস্যদের এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের খবর দেন এবং তাঁদের প্রচেষ্টায় ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করেন। নিহত শাহপরান তুষারের বাবা উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের রামদেবপুর গ্রামের ইউপি সদস্য সিদ্দিকুর রহমান খোকন জানান- ওইদিন রাতে তাঁর ছেলে বন্ধুদের সঙ্গে কুমিল্লায় একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে মিলিত হয়। রাত বেশি হওয়ায় কোনো পরিবহণ পাওয়া যায়নি। এ সময় নয়ন-সাগরসহ তিন বন্ধু, গাজিপুরের সাগর (গাড়ী চালক)কে নিয়ে প্রাইভেটকার যোগে মনোহরগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় যাচ্ছিল। পথিমধ্যে দুর্ঘটনায় সবাই প্রাণ হারায়। নয়ন ও সাগর সম্পর্কে মামাতো-ফুফাতো ভাই বলে জানা গেছে।