সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

কুয়েট শিক্ষকের মৃত্যু: ৪৪ শিক্ষার্থীকে শোকজ

খুলনা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত সময় : বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ১৭২ পাঠক পড়েছে

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ৪৪ জন ছাত্রকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের প্রফেসর ড. মো. সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ সাময়িক বহিষ্কৃত ৯ শিক্ষার্থীসহ ৪৪ শিক্ষার্থীকে এ নোটিশ দিয়েছে শৃঙ্খলা কমিটি। বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) দেওয়া এ নোটিশে আগামী ৩ জানুয়ারির মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে ছাত্রদের।

কুয়েটের মুখপাত্র মো. রবিউল ইসলাম এ সব তথ্য নিশ্চিত করে  বলেন, বৃহস্পতিবার সব ছাত্রদের কাছে শোকজের চিঠি দেওয়া হয়েছে। ৩ জানুয়ারির মধ্যে তাদের জবাব দিতে বলা হয়েছে। তাদের জবাব পাওয়ার পর তা যাবে শৃঙ্খলা কমিটিতে। সেখান থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে উত্থাপন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, শৃঙ্খলা কমিটি মোট ১২৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। এর মধ্যে শিক্ষক ৩৫ জন, শিক্ষার্থী ৬৫, কর্মকর্তা ১৭, পরিবার ৫ ও অন্যান্য ৪ জন রয়েছেন।

ফজলুল হক হলের বর্ডার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান তার অনুগতদের ডাইনিং ম্যানেজার নির্বাচিত করার প্রচেষ্টার জন্য ৩০ নভেম্বর (মঙ্গলবার) ড. মো. সেলিমের দাপ্তরিক কক্ষে অশালীন আচরণ ও মানসিক নির্যাতন করেন। সাধারণ সম্পাদকসহ উপস্থিত কর্মীরা হলের প্রভোস্ট ড. সেলিম হোসেনকে বেশ কয়েকদিন ধরে নিয়মিত হুমকি দিয়ে আসছিলেন তাদের মনোনীত প্রার্থীকে নির্বাচন করার জন্য। তারই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগ কর্মীরা ক্যাম্পাসের রাস্তা থেকে ড. সেলিম হোসেনকে জেরা করা শুরু করেন। পরে তারা শিক্ষককে অনুসরণ করে তার ব্যক্তিগত কক্ষে (তড়িৎ প্রকৌশল ভবন) প্রবেশ করেন। এরপরে বিকেল ৩টায় বাসায় ফিরে মারা যান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. সেলিম হোসেন।

শিক্ষকের মৃত্যুর দিন রাতে এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির সভাপতি ছিলেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. আরিফুল ইসলাম। এ ছাড়া দু’জন সদস্য ছিলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক আতাউর রহমান ও ইইই বিভাগের অধ্যাপক কল্যাণ কুমার হালদার। তাদের মধ্যে কল্যাণ কুমার হালদার লিখিতভাবে এবং মো. আরিফুল ইসলাম মৌখিকভাবে তদন্ত করতে অপারগতা জানিয়েছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার (০৩ ডিসেম্বর) রাতে পাঁচ সদস্যের নতুন এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

শনিবার (০৪ ডিসেম্বর) ছাত্র শৃঙ্খলা ও আচরণবিধি ভঙ্গ করায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ ৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়।

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) ড. সেলিমের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালীর বাঁশগ্রাম কবরস্থান থেকে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ সাদাতের তত্ত্বাবধানে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়। ঢাকা মেডিক্যালের ফরেনসিক বিভাগে ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে তার মরদেহ বাঁশগ্রামে পুনরায় দাফন করা হয়।

প্রফেসর ড. সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হলে শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে সিন্ডিকেট সভায় ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্যাম্পাস বন্ধসহ বিকেল ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে বন্ধের মেয়াদ ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে ৭৮তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় জানানো হয়, কুয়েটের শিক্ষা কার্যক্রম ২০২২ সালের ৯ জানুয়ারি থেকে চালু হবে। এর আগে শিক্ষার্থীদের জন্য ৭ জানুয়ারি আবাসিক হল খুলে দেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2020 । দৈনিক আজকের সংবাদ
Design and Developed by ThemesBazar.Com
SheraWeb.Com_2580