তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, কৃষিই বাংলাদেশের উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি। এ বিবেচনা বোধ থেকে কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রতিমন্ত্রী আজ বুধবার সকালে নাটোরের সিংড়া উপজেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে খরিপ-২ মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বিনামূল্যে আমন ধানের বীজ ও সার বিতরণ অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
সিংড়া উপজেলা হল রুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে সভা সঞ্চালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম সামিরুল ইসলাম এবং বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সেলিম রেজা, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কামরুল হাসান কামরান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা রুহুল আমিন।
পলক বলেন, অতীতে কৃষি ও কৃষকের অবস্থা ছিল বিভীষিকাময়। ’৯১ থেকে ’৯৬ এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে এদেশের কৃষকরা সারের টোকেন পেতে দিনের পর দিন ঐ সময়ের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বাড়িতে বাড়িতে ধরনা দিয়েছেন। তবুও সার পাননি। বাজার মূল্যের পাঁচগুণ পর্যন্ত বেশী দরে সার কিনতে হয়েছে। সারের দাবিতে দিনাজপুরে ১৪ জন কৃষককে প্রাণ দিতে হয়েছিল। সেচের বিদ্যুতের দাবিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষকদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার কৃষিবান্ধব সরকার। বিগত ১২ বছর ধরে কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। কয়েক দফায় সারের দাম কমানো হয়েছে এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে ডিলারের মাধ্যমে কৃষকদের জন্য সারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গবেষণার মাধ্যমে সৃষ্ট উন্নত বীজ কৃষকদের কাছে সহজলভ্য করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সেচের তেল ও বিদ্যুতে ব্যাপকভাবে ভর্তুকি প্রদান করছে সরকার। সেচ সুবিধার জন্যে ব্যাপকভাবে খাল খনন করা হচ্ছে। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিভিন্ন মৌসুমে নিয়মিতভাবে প্রণোদনা প্রদান করা হচ্ছে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এবং অর্ধেক বা তারও বেশি ভর্তুকি মূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হচ্ছে। অনলাইনে কৃষকদের বিশেষজ্ঞ পরামর্শ প্রদান করতে কাজ করছে কৃষক বন্ধু কল সেন্টার। সরকারের কৃষিবান্ধব এসব কাজের সুফল হিসেবে দেশে কৃষকদের আর্থিক বুনিয়াদ সুসংহত হয়েছে এবং খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে বাংলাদেশ খাদ্য রফতানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে।
পলক বলেন, কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন চিন্তা মাথায় রেখে সরকার গ্রামীণ সড়কের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। এখন কৃষক অনায়াসে কৃষি উৎপাদনে প্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহ করে গন্তব্যে নিতে পারেন এবং তাদের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে পারেন। ৭৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ৬৪ কিলোমিটার নাটোর-বগুড়া মহাসড়ক প্রশস্তকরণ এবং চার লেনে উন্নীতকরণের ফলে কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এমনকি তারা অনায়াসে তাদের উৎপাদন নিয়ে এ মহাসড়কের সঙ্গে যোগসূত্র তৈরি হওয়া মোংলা বন্দর কিংবা অন্যান্য স্থল বন্দরে যেতে পারবেন।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, আসন্ন কোরবানির হাট সরাসরি আয়োজন না করে অনলাইন ডিজিটাল হাটের মাধ্যমে পশু বিপণন কার্যক্রম সম্পন্ন করা উচিত। এ লক্ষ্যে আইসিটি মন্ত্রণালয় সকল কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। অনলাইন ডিজিটাল কোরবানির হাটে ক্রেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনায়াসে পশুর পর্যবেক্ষণ এবং দর-দাম নির্ধারণ করতে পারবেন।