স্বামী-স্ত্রী দুজনের নামে রয়েছে ২২ মামলা। প্রতারণার মাধ্যমে তারা বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরিচয় ও অবস্থান বদল করে এ দম্পতি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। অবশেষে বৃহস্পতিবার (২৭ মে) রাতে ধরা পড়েছেন র্যাবের হাতে।
রাজধানীর বাংলামোটর এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে র্যাব-৪ ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- এইচ এন এম সফিকুর রহমান (৫৯) ও তার স্ত্রী কাজী সামছুন নাহার মিনা (৫৪)। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাসহ ২২ মামলা রয়েছে। কয়েকটিতে সাজা ঘোষণা হয়েছে বলেও র্যাব জানতে পেরেছে।
শুক্রবার (২৮ মে) র্যাব-৪-এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গ্রেফতার হওয়া সফিকুর রহমান ২০০২ সালে আইডিয়াল কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে একটি সমবায় প্রতিষ্ঠান চালু করেন। তিনি নিজে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে ছিলেন এবং তার পরিবারের সদস্যরা ওই প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন।
সমবায় প্রতিষ্ঠান চালুর পর সফিকুর লোকজনের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেন। এরপর আইসিএল রিয়েল স্টেট নামে প্রতিষ্ঠান খুলে ব্যবসা শুরু করেন। সেখানেও তিনি মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করেন।
প্রতারণার শিকার ব্যক্তিরা সফিকুরের নামে থানায় এবং আদালতে একাধিক মামলা করেন। অনেককে তিনি ভয়ভীতি দেখান। তাতে কেউ কেউ মামলা করতে সাহস পাননি।
র্যাব জানায়, সফিকুর ও তার স্ত্রীর নামে আদালতে ২২টি পরোয়ানা জারি হয়। তখন তারা পলাতক জীবনযাপন শুরু করেন। গ্রেফতার এড়াতে তারা দুই-তিন মাস অন্তর বাসা বদলাতে থাকেন। এমনকি তারা মোবাইল নম্বরও বদলে ফেলেন।
আসামি এইচ এন এম সফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় দুটি সিআর (সাজা) ওয়ারেন্ট রয়েছে। পল্টন ও চৌদ্দগ্রাম থানায় রয়েছে মোট ১৯টি ওয়ারেন্ট। যার ছয়টি নিয়মিত মামলা। খিলক্ষেত থানায় একটি মামলা তদন্তাধীন।
অন্যদিকে কাজী সামছুন নাহার মিনার নামে পল্টন থানায় রয়েছে তিনটি ওয়ারেন্ট। তার বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় ছয়টি নিয়মিত মামলা তদন্তাধীন রয়েছে।
র্যাব জানায়, গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন। তাদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রতারক দম্পতির বিরুদ্ধে অনেকে নতুন করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও র্যাব সূত্র জানিয়েছে।