করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজের মাধ্যমে বাংলাদেশের ৪০ শতাংশ মানুষ টিকা পাবে। এর অংশ হিসেবে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই দেশের ২০ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
শনিবার (২ অক্টোবর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এতে বলা হয়, শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ডা. টেড্রস আধানম গেব্রেয়েসাসের সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের সাথে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে বেশ ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক আলোচনার প্রথম পর্যায়ে ডিসেম্বরের মধ্যেই বাংলাদেশে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজের আওতায় দেশের ২০ শতাংশ মানুষের জন্য ভ্যাকসিন পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, দেশের জনসংখ্যা অনুযায়ী আমরা ৪০ শতাংশ মানুষের জন্য ভ্যাক্সিন পাঠানোর অনুরোধ জানালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক পর্যায়ক্রমে দ্রুতই ৪০ শতাংশ মানুষের জন্য ভ্যাকসিন পাঠাতে সম্মত হয়েছেন। আশা করা যাচ্ছে, ডিসেম্বরের মধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজের আওতায় দেশের ২০ শতাংশ মানুষের জন্য ভ্যাক্সিন পাওয়া সম্ভব হবে। খুব অল্প সময়েই দেশের ৪০ শতাংশ মানুষের জন্য ভ্যক্সিন পাওয়া যাবে। এর পাশাপাশি অন্য মাধ্যম থেকেও আমাদের ভ্যাক্সিন ক্রয়ের কাজটিও চলমান থাকবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, দ্বি-পাক্ষিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকটিতে বাংলাদেশেই ভ্যাক্সিন উৎপাদনের জন্য কারিগরি সহায়তারও আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক। পাশাপাশি, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ভ্যাক্সিন টেস্টিং ক্যাপাসিটি অব দ্য ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরি এর অ্যাক্রিজিটেশন প্রদানের কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করবেন বলেও জানিয়েছেন মহাপরিচালক।
দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে গত দেড় বছরে কোভিড মোকাবিলায় বাংলাদেশ কী কী উদ্যোগ নিয়েছে, তা তুলে ধরলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক কোভিড মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভ্যাকসিন প্রদানে বাংলাদেশের সফলতার কথা উল্লেখ করেন এবং দুটি বড় মাপের সফল ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন করার বিষয়টি তুলে ধরেন। এর মধ্যে গত ২৮ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী ৮০ লাখেরও বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে এবং এই কাজে সরকারি, বেসরকারি মিলে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছেন বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ভ্যাক্সিন প্রদানে বাংলাদেশ নজির সৃষ্টি করেছে বলে জানান ও বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের কাছে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজের আওতায় ফাইজার ও মডার্নার ভ্যাক্সিন আরও বেশি সংখ্যক পরিমাণে পাওয়ার অনুরোধ জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। মহাপরিচালক বিষয়টিতে গুরুত্ব দেবেন বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন।