আপনার স্কুলের শুরুর গল্প বলুন?
স্কুলের শুরু হয়েছে ১৯৫৫ সালে ঢাকা ইংলিশ প্রিপেটরী স্কুল নামে। তখন বলতে গেলে এটা ঢাকা শহরে প্রথম ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহোদয়ের বাংলোর পেছনে ছোট একটি বাসায় এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মেরিওল হ্যাজ বানওয়েল, তিনি একজন ব্রিটিশ ভদ্রমহিলা। ব্রিটিশ কাউন্সিলের সংযোগ এখানে ছিল। মূলত ব্রিটেনের কিছু নাগরিকের উদ্যোগে এবং মেরিওল হ্যাজ বানওয়েলের নেতৃত্বে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা হয়। স্বাধীনতার পর বাংলার ব্যাপক প্রচলন শুরু হয়। ১৯৭২ সালে উদয়ন নাম হয় এবং বাংলা মিডিয়াম হয়।
স্কুলের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাই।
প্রি-প্রাইমারি থেকে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত আছে। অর্থাৎ ১৩টি ক্লাস আমরা চালাচ্ছি। এখানে শিক্ষক আছেন ১০৫ জন। শিক্ষার্থীসংখ্যা তিন হাজার ৭০০ জন। ৫৪টি ক্লাসরুম রয়েছে আমাদের। ক্লাস টু থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত মর্নিংয়ে পড়াই। পৌনে ৮টায় ক্লাস শুরু হয়। ক্লাস টু ও থ্রি শেষ হয় ১১টা ৫০ মিনিটে। ১১টা ৫০-এ শেষ হলে ওখানেই আমরা প্রাক-প্রাথমিক ও ক্লাস ওয়ান—এ দুটো চালাই।
অন্য স্কুলগুলোর তুলনায় আপনার স্কুলের বিশেষত্ব কোথায়?
এখানে কো-এডুকেশন। একসঙ্গেই ছেলে-মেয়েরা পড়ছে। আমরা ক্লাস টিচিংয়ের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। অধিকাংশ নামকরা স্কুলের কোথাও ৩০ মিনিটও ক্লাস আছে। কিন্তু আমরা কারিকুলাম অনুসরণ করে প্রতিটি ক্লাস ৫০ মিনিট নিয়ে থাকি। ক্লাস যাতে সুন্দরভাবে ঠিকমতো হয়, তার জন্য প্রশাসনিকভাবে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আমাদের শিক্ষকরা দক্ষ। তাঁদের দক্ষতা আরো বড়ানোর জন্য আমরা ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করে থাকি।
উচ্চহারে টিউশন ফি আদায় নিয়ে অনেকে অভিযোগ করে থাকেন। এ বিষয়ে আপনাদের অবস্থান কী?
উচ্চহারে টিউশন ফির বিষয়টা আমি আসলে আমলে আনতে চাই না। একটা ব্যাপার হলো, অনেকে আছে, প্রি-প্রাইমারিতে যায় পয়সা দিতে হবে না বলে। আবার অনেকে আমেরিকায় যায়, কেউ আছে ভারতে যায় মিশনারি স্কুলে পড়তে। এটা হলো যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী। আপনি যদি সুযোগ-সুবিধা পর্যাপ্ত দিতে চান, তাহলে টিউশন ফি দিতেই হবে। শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং প্রশাসন সুন্দরভাবে চালাতে হলে পয়সা খরচ না করে পারবেন না। আমরা যে বেতন নিই, তাতে প্রতি মাসেই আমাদের ঘাটতি হয়ে যাচ্ছে। অনেক টাকার ঘাটতি হয়।
একাডেমিক পড়াশোনার বাইরে আর কোনো সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেন?
আমরা স্টাডি ট্যুরে খুব একটা নিতে পারি না। আমাদের বাস নেই, তাদের সিকিউরিটি আর খরচের ব্যাপারটা তো আছেই। এই তিনটি কারণে স্টাডি ট্যুরে নিতে সাহস করি না। আমাদের এখানে অনেকগুলো ক্লাব আছে। আর খেলাধুলা নিয়েও আমরা অত্যন্ত সচেতন। আমি একটা বিষয় বিশ্বাস করি, কারিকুলাম বাচ্চাকে যা শেখাবে, কো-কারিকুলাম বাচ্চাকে সমৃদ্ধ করবে। স্কুলে রেজাল্ট পায় বছরের শেষে, কিন্তু কো-কারিকুলামের ফলাফল সে প্রতিনিয়ত পাচ্ছে। আরেকটা হলো, একজন শিক্ষিত লোক—তাকে বিচার করার ক্ষমতা অর্জন করতে হবে। সে যত বিষয়ের সঙ্গে ইনভলব হবে, তত বিষয় বিচার করতে পারবে।