বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া করোনা পরবর্তী নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। মানবিক দিক বিবেচনা করে সরকার দ্রুতই তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার অনুমতি দেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি। এসময় মির্জা ফখরুল জানান, ‘আমরা আশা করি সরকার মানবিক কারণে তার বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। আর এই দেশের কোটি কোটি মানুষের প্রিয় নেতার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। এটা তো অবশ্যই বাংলাদেশের মানুষের অধিকার যে তারা তাদের নেতাকে সুস্থ দেখতে চায়।’
এর আগে, বৃহস্পতিবার সকালে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে নিতে পরিবারের করা আবেদন গ্রহণ করেছে আইন মন্ত্রণালয়। এসময় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, মানবিক দিক বিবেচনা করে বিদেশে গিয়ে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার আবেদনের বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে। আবেদনটি যাচাই-বাছাই চলছে।
গতকাল বুধবার (৫ মে) রাতে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার প্রয়োজন হলে সরকার ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করবে। আবেদন পাঠানো হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এদিকে, করোনায় আক্রান্ত খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনা কেয়ার ইউনিটে। তবে শারীরিক অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকেরা। গত ২৭ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে করোনা আক্রান্ত খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সিটি স্ক্যানসহ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় তার। গত ১১ এপ্রিল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন ৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়া।
প্রসঙ্গত, দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে যেতে হয়। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, গত বছরের ২৫শে মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে, শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য তার সাজা স্থগিত করে। তারপর থেকে খালেদা জিয়া গুলশানে ভাড়া বাসা ফিরোজায় অবস্থান করছিলেন। এরমধ্যে দুই দফা তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সাজা স্থগিতের অন্যতম শর্ত, দেশেই থাকতে হবে খালেদা জিয়াকে; অংশ নিতে পারবেন না কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে।