রূপসায় প্রতিবন্ধীর টাকা ইউপি সদস্যর স্ত্রীর একাউন্টে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মোবাইল নম্বর ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে এর সত্যতা মিলেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নৈহাটী ইউনিয়নের নেহালপুর গ্রামের বাসিন্দা শারীরিক প্রতিবন্ধী মোঃ মনিরুল সেখ প্রথমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরারব লিখিত অভিযোগ এবং পরে সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি করেন। জিডিতে বলা হয়েছে, রূপসা উপজেলার নৈহাটী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের নেহালপুর এলাকার বাসিন্দা মোঃ আইয়ুব আলী সেখের ছেলে শারিরীক প্রতিবন্ধী মোঃ মনিরুল সেখ গত বছর স্থানীয় সমাজকর্মী লিপিকা রানী দাসের মাধ্যমে সমাজসেবা দপ্তরে আবেদন করেন।
আবেদনের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডটি চূড়ান্ত হয়। ওই চূড়ান্ত কার্ডে ০১৯৮৩-০৫৩৬০৮ নম্বর দেওয়া হয়। পরবর্তীতে নেহালপুর এলাকার ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহ মোঃ রবিউল ইসলাম ফকিরের কারসাজিতে প্রতিবন্ধী মনিরুলের মোবাইল নম্বর (বিকাশ) প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডে না দিয়ে তিনি তার স্ত্রী মোসাঃ নুরজাহান বেগমের মোবাইল নম্বর (০১৭৮৯-১৭৮৩৫১) ওই প্রতিবন্ধীর ভাতার কার্ডে লিখে দেন। ফলে প্রতিবন্ধী মনিরুলের এক বছরের ভাতা ৯ হাজার টাকা ওই ইউপি সদস্যর স্ত্রী নুরজাহানের বিকাশ নম্বরে প্রেরণ করা হয়েছে। যা সরকারি নিয়ম-নীতির লঙ্ঘন।
এদিকে প্রতিবন্ধী মনিরুল সেখ গত ১৬ আগস্ট প্রথমে উপজেলা নির্বাহী বরবার ও সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি করেন। এ জিডির প্রেক্ষিতে ইউপি সদস্যর স্ত্রী নুরজাহান বেগমের মোবাইল নম্বর ট্রাকিং করলে সত্যতা বেরিয়ে আসে। সমাজসেবা দপ্তরের ভাতার টাকা মোবাইলে দেওয়ার কাজ করেন হৃদয় হাওলাদার। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীর ভাতার কার্ডে যে বিকাশ মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছে সে বিকাশ নম্বরটি ইউপি সদস্যর স্ত্রী নুরজাহানের। সমাজসেবা দপ্তর থেকে নুরজাহানের বিকাশ নম্বরে এক বছর ধরে প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা প্রেরণ করা হয়েছে, যা তারা জানেন না।
সুকৌশলে প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা উত্তোলন করে আসছে ইউপি সদস্যর স্ত্রী। ন্যাক্কারজনক এ বিষয়টি নিয়ে জনমনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উল্লেখ্য এই ইউপি সদস্যের দৃশ্যমান কোনো বৈধ আয়ের উৎস না থাকলেও নির্বাচিত হবার পর থেকেই নৈহাটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তার ওপর অর্পিত দায়িত্বের প্রতিটি ক্ষেত্র থেকেই তিনি অনিয়মতান্ত্রিকভাবে অবৈধ উপার্জন করে রাজকীয় জীবনযাপন করে আসছেন। সুত্রমতে বিভিন্ন শালিস বিচারে বাদী বিবাদী ২ পক্ষ থেকে তিনি নজরানা নিয়ে সর্বোচ্চ নজরানা প্রদানকারীর পক্ষে রায় প্রদান করে থাকেন।
আশ্রয়হীন পরিবারের জন্য মুজিব শত বর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার সেমিপাকা বাড়ি দেবার আশ্বাস দিয়ে স্থানীয় ১৫/১৬ জনের কাছ থেকে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়েও তাদেরকে বাড়ী না দিয়ে প্রতারনার ও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ভিজিডি কার্ড, বিধবা ভাতা কার্ড, বয়স্ক ভাতা, কাবিখা/কাবিটার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পসহ যে কয়েকটি কাজ তিনি করেছেন প্রত্যেকটি কাজ যথাযথ অনুসন্ধান চালালে ব্যাপক অনিয়ম পাওয়া যাবে। ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর দাবি তিনি ইউপি সদস্যের দায়িত্ব নেবার পর সরকারি যে সকল কর্মকান্ডে তার সম্পৃক্ততা আছে সবই অনুসন্ধান করে তার বিরুদ্ধে প্রচলিত বিধি মোতাবেক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।