ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ শক্তি হারিয়ে এখন গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে আগামী দুই-তিন দিন দেশে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কায় কক্সবাজার ও টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের পথে যাতায়াতকারী সব জাহাজ চলাচল আজ রোববার সকাল থেকে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানিয়েছেন, আবহাওয়া পরিস্থিতি ভালো না হওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।
টেকনাফ সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে ১৫৪টি আবাসিক হোটেলে বর্তমানে সহস্রাধিক পর্যটক রয়েছেন। তারা গতকাল রাতেও ফিরে যেতে পারেননি। কারণ সেন্টমার্টিন থেকে জাহাজ ছাড়ার পরে উপজেলা প্রশাসন থেকে এগুলো চলাচল বন্ধের ঘোষণা আসে। ফলে ওই পর্যটকদের পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত সেন্টমার্টিনেই থাকতে হবে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের টানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে ওঠার আগেই মূলত দুর্বল হয়ে পড়বে। আর তা আমাদের দেশের উপকূলে আসতে আসতে নিম্নচাপে পরিণত হবে।’
দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে পূর্ব বা উত্তর-পূর্ব দিক দিয়ে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে, সেই সঙ্গে বৃষ্টি বা বজ্র বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্য এলাকায় আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সকালের দিকে দেশের কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে।