মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে স্বামীকে নির্যাতন করে বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী রোজিনা খাতুনকে (২৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার রাতে গাংনী হাসপাতাল বাজার এলাকা থেকে রোজিনাকে গ্রেফতার করে গাংনী থানা পুলিশের একটি দল। গ্রেফতার রোজিনা খাতুন গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামের আতাহার আলীর মেয়ে।
মঙ্গলবার রাতে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোজিনার স্বামী সাইফুল ইসলাম (২৭) মারা যান। এরপর স্ত্রী ও তার পরিবারের লোকজন তাকে পিটিয়ে বিষ খাইয়ে হত্যা করেছে এমন অভিযোগে গাংনী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন নিহতের ভাই শরিফুল ইসলাম। ওই মামলার প্রধান আসামি হিসেবে রোজিনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা।
অভিযোগে জানা গেছে, সোমবার রাতে পারিবারিক কলহের জের ধরে দেবীপুর গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে সাইফুল ইসলাম তার স্ত্রীকে ক্ষুর দিয়ে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা চালায়। আত্মরক্ষার চেষ্টা চালালে ক্ষুরের পোচ লাগে রোজিনার শরীরের বিভিন্ন স্থানে। স্বামীর হাত থেকে রক্ষা পেতে রোজিনা ইট দিয়ে তার মাথা ফাটিয়ে দেয়। পরে পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে রোজিনাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। তারা কয়েকজন মিলে সাইফুলের উপর আক্রমণ করে। এতে সাইফুল গুরুতর আহত হলেও তার চিকিৎসা না দিয়ে একটি গাছের সাথে বেঁধে রাখে। শুধু তাই নয়, মারধরের পাশাপাশি সাইফুলকে জোর পূর্বক কীটনাশক মুখে ঢেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন সাইফুলের বাবা।
সাইফুলের বাবা ভাদু মণ্ডল জানান, সাইফুলকে গাছে বেঁধে মারধর ও মুখে কীটনাশক ঢেলে দেওয়ার সংবাদ পেয়ে বামন্দী ক্যাম্প পুলিশের একটি টিম সাইফুলকে উদ্ধার করে গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করে। তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করলে গভীর রাতে সাইফুলের মৃত্যু হয়।
নিহত স্বামী ও আহত স্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনদের সূত্রে জানা গেছে, স্বামী সাইফুল ইসলাম মাদকসেবী। তিনি বিভিন্ন সময়ে স্ত্রীকে অত্যাচার করতেন।
অপরদিকে রোজিনার বিরুদ্ধেও রয়েছে পরক্রিয়ার অভিযোগ। ২০২০ সালের প্রথমে স্ত্রী রোজিনা খাতুন সাইফুলকে তালাক দিয়ে বাপের বাড়িতে বসবাস করছিলেন। আট মাস আগে রোজিনার ঘরের সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে রোজিনাকে মারধর করে ও তার বাড়িতে নিয়ে আসার চেষ্টা করে। টের পেয়ে গ্রামের লোকজন সালিশ করে দু’জনকে আবারও বিয়ে দিয়ে দেন এবং রোজিনার বাবার বাড়িতে থাকার বন্দোবস্ত করেন।
রোজিনার গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে গাংনী থানার সেকেন্ড অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে গ্রেফতার করে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এছাড়া অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।