বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, গ্রামীণ অঞ্চলে উদ্যোক্তা তৈরির প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। গ্রামীণ জনগণকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত রাখতে পারলে সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত হবে। ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়িত হবে।
প্রতিমন্ত্রী শনিবার অনলাইনে এডিবির অর্থায়নে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন এক প্রকল্পের আওতায় ৩৮৫ জন লাইফলাইন গ্রাহককে ৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার ব্যবসায়িক সরঞ্জাম প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
লাইফলাইন গ্রাহকদের উদ্যোক্তা করার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করা প্রয়োজন। প্রকল্প বাদেও করপোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটির আওতায়ও এটা করা উচিৎ। প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রশিক্ষণার্থীরা তা কীভাবে ব্যবহার করছে বা কেন ব্যর্থ হচ্ছে বা অন্যদের শিখাচ্ছে কী না-বিষয়গুলো নিয়ে প্রশিক্ষণোত্তর পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখা আবশ্যক।
প্রতিমন্ত্রী এসময় ‘গ্রামীণ জীবনমান উন্নয়নে বিদ্যুৎ শক্তি’ প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংককে (এডিবি) ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এডিবি বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, রিসাইকেল প্ল্যান্ট, স্মার্ট মিটার, স্মার্ট গ্রিড, লিথিয়াম ব্যাটারির কারখানা স্থাপন, ভূগর্ভস্থ বিররণ লাইন স্থাপন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অটোমেশন ইত্যাদি প্রকল্প অর্থায়ন, কারিগরি বা পরামর্শক সেবা দিয়ে সহযোগিতা করতে পারে।
বাংলাদেশের অধিক দুর্যোগপ্রবণ, পশ্চাদপদ ও নিম্ন আয়ের ৫টি জেলার (গোপালগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, ভোলা ও সুনামগঞ্জ) মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, গ্রামীণ উদ্যোক্তা তৈরিকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন, কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং বিদ্যুতের দক্ষ, নিরাপদ ও উৎপাদনশীল ব্যবহারে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ‘গ্রামীণ জীবনমান উন্নয়নে বিদ্যুৎ শক্তি’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এডিবির মাধ্যমে জাপান ফান্ড ফর পোভারটি রিডাকশন (জেএফপিআর) হতে প্রাপ্ত অনুদান, জিওবি ও সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি পরিচালিত হয়। প্রকল্পটির মেয়াদকাল ৩ বছর এবং ব্যয় ১৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা যেখানে প্রকল্প অনুদান প্রায় ৯৪%। অবশিষ্ট ৬% জিওবি এবং সংস্থার। প্রকল্পটির আওতায় ২৭০০ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে, যেখানে ২১০০ জন ০৫টি জেলার পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক গ্রাহক। অবশিষ্ট ৬০০ জন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারী।
প্রকল্প এলাকায় বিদ্যমান পেশার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে লাইফলাইন গ্রাহককে প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে নির্বাচন করা হয়। ২১০০ জন প্রান্তিক গ্রাহককে ১০টি ট্রেডে সর্বোচ্চ ২৮ দিন ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক ‘প্রাক্টিক্যাল অ্যাকশন কন্সালটিং’ শীর্ষক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প (বিসিক), টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ (টিএসসি), কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কর্তৃক এ প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে।
আরইবির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিনের (অব.) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মাঝে বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান এবং এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন পারকাশ সংযুক্ত থেকে বক্তব্য রাখেন।