স্টাফ রিপোর্টার : জনগণের উৎসাহে করোনা টিকার বিরুদ্ধে বিএনপির অপপ্রচারে ভাটা পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। রোববার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে আমাদের অর্জন ও বর্তমান প্রজন্মের ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা ও কেন্দ্রীয় বিশেষ প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন। আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান মোল্লা দুর্জয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এডভোকেট বলরাম পোদ্দার।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারির শুরুতে অনেকে আতঙ্কে ছিলেন। এমনকি কেউ কেউ মনে করেছিলেন যে, বাংলাদেশে হাজার হাজার মানুষ না খেয়ে মার যাবে এবং রাস্তায় লাশ পড়ে থাকবে। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় ও জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে দেশে একজন মানুষও অনাহারে থাকেননি, রাস্তায় লাশ পড়ে থাকেনি।’ ‘তারা মনে করেছিলেন, সরকার করোনার ভ্যাকসিন সঠিক সময়ে আনতে বা সংগ্রহ করতে পারবে না। সরকার ঘোষণা অনুসারে জানুয়ারির মধ্যেই ৭০ লাখ ডোজ করোনা ভ্যাকসিন দেশে এনেছে।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অপপ্রচারকারীরা এরপর বলল যে, এই ভ্যাকসিন কাজ করবে না। এই ভ্যাকসিন আগে মন্ত্রী-আমলাদের নিতে হবে। এখন সরকারের মন্ত্রী-আমলারা আগে করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছে। ফলে তাদের মুখ চুপসে গেছে। যদিও এমপি, মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা আগে ভ্যাকসিন নিতে চাননি, কিন্তু মানুষকে পথ দেখানোর জন্য অনেকে নিয়েছেন। তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই।’ ‘সবাই বিপুল উৎসাহে ভ্যাকসিন নেওয়া শুরু করেছে। এখন বিএনপি কী বলবে? শেষ পর্যন্ত তারা এই ভ্যাকসিন নেবেন না কি নেবেন না, নাকি পাকিস্তান কখন ভ্যাকসিন আবিষ্কার করবে সেটার জন্য বসে আছেন—এটিই হচ্ছে বড় প্রশ্ন,’ বলেন তথ্যমন্ত্রী।তিনি বলেন, ‘আমি বিএনপি নেতাদের অনুরোধ জানাবো, এ ধরনের সমালোচনা বাদ দিয়ে আপনারা সরকার যে ভ্যাকসিনের বিষয়ে সাফল্য দেখিয়েছে দয়া করে তার প্রশংসা করুন। সরকার যে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করেছে, সেটি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন, যা ভারতে উৎপাদন করা হচ্ছে। এটি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ সংগ্রহ করে জনগণকে দিচ্ছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ সমগ্র পৃথিবী এটার ওপর আস্থা রেখেছে। শুধু বিএনপিনেতা মির্জা ফখরুল সাহেব, রিজভী আহমেদ সাহেব আর গয়েশ্বর বাবু আস্থা রাখতে পারেননি। তাদের নিজেদের ওপর আস্থা নেই, এজন্য সমালোচনা করেন। তাই আমি অনুরোধ জানাবো, এ ধরনের অহেতুক সমালোচনা করবেন না। আপনারা যদি আগে ভ্যাকসিন চান, তাহলে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই ভ্যাকসিন নিতে লজ্জা পাবেন না। আপনারা আগে চাইলে, সরকার আগে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।’
সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে বিএনপির নানা অভিযোগের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রামে ৫২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে একজন কাউন্সিলরও তারা পাননি। এটি তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা। একইসাথে তারা যে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, সেটির বাস্তবতা। এই বাস্তবতা যখন তারা মানবেন না, তখন তাদের পক্ষে ভোটে দাঁড়ানো বা জেতা সম্ভব হবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমি বিএনপি নেতাদের অনুরোধ জানাবো, সরকারের সমালোচনা না করে আপনারা এই করোনাকালে জনগণের পাশে দাঁড়ান। আসুন সবাই মিলে একযোগে মানুষের পাশে দাঁড়াই। রাজনীতি মানুষের জন্য, দেশের জন্য। রাজনীতি দলের জন্য নয়।’