স্টাফ রিপোর্টার : নিরাপদ খাদ্যের অধিকার প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। দেশের জনগণের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে এই পরিসর বিস্তৃত হয়েছে। দেশের প্রতিটি জেলায় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের জেলা কার্যালয় স্থাপন করে তাদের মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য মনিটরিং ব্যবস্থা রুট লেভেল পর্যন্ত জোরদার করা হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ১১:০০টায় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ঢাকার ইস্কাটনের প্রবাসী কল্যাণ ভবনে বিজয় একাত্তর হলে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, সুস্থ-সবলভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রতিটি মানুষের নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ একান্ত প্রয়োজন। তাই খাদ্যের উপাদান ও নিরাপত্তা সম্পর্কে সবারই কিছু না কিছু সাধারণ জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। জনগণের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত, ভেজালমুক্ত, নিরাপদ খাদ্যপ্রাপ্তি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের আমলে নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ প্রণয়ন করা হয় এবং এই আইনের আওতায় একটি জাতীয় বিধিবদ্ধ সংস্থা হিসাবে ২০১৫ সালে ‘বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ’ গঠন করা হয়। ১৮ টি মন্ত্রণালয় এবং ৪৮৬টি সংস্থা এ কর্মযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন, খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণে একটি কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি-বেসরকারি অংশীজনের মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে খাদ্যে ভেজাল রোধে সচেতনতামূলক প্রচারণাসহ বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। সংস্থাটি খাদ্যের নিরাপত্তা ও গুণগতমান পরীক্ষণ, নিরাপদতার মান অনুসারে রেস্টুরেন্টের গ্রেডিং প্রদান ও নিয়মিত মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে । ২০১৯ সালে দেশের বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয় আনুষ্ঠানিকভাবে এ+, এ, বি, সি এই চার ক্যাটাগরিতে গ্রেডিং পদ্ধতির প্রবর্তন করা হয় ঢাকা মহানগরীর হোটেল-রেস্তোরাঁকে।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে মন্ত্রী আরো বলেন, খাদ্যের নিরাপত্তা ও গুণগতমান পরীক্ষণের জন্য দেশের ৬টি বিভাগে ৬টি ল্যাবরেটরী নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ঋঅঙ এর সহযোগিতায় একটি মোবাইল ল্যাবরেটরী ভ্যানের কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। খাদ্যের উৎপাদন হতে শুরু করে খাবার টেবিল পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, আমরা খাদ্যের উৎপাদন হতে শুরু করে খাবার টেবিল পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে খাদ্যের নিরাপদতা নিশ্চিত করতে চাই। এ লক্ষ্যে সকল অংশীজনসহ সাধারন মানুষের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টির কাজ করা হচ্ছে। ভেজালখাদ্য রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টিকল্পে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে জেলা-উপজেলায় সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, পাবলিক মিটিং, লিফলেট, পোস্টার, বুকলেট, স্টিকার, প্যাম্পলেট বিতরণসহ স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও জেলা পর্যায়ে ক্যারাভান শো’র মাধ্যমে জনগণের মধ্যে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে সংস্থাটি। দীর্ঘ মেয়াদে উন্নত এবং একটি সুস্থ জাতি জাতি গঠনে এর কোন বিকল্প নেই, বলেন তিনি।
এ সময় মন্ত্রী সকলকে সচেতন এবং আন্তরিক হবার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে প্রতিটি পেশার মানুষ; সর্বোপরি সকল জনগণকে নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ে সচেতন ও আন্তরিক হতে হবে। সকলে মিলে একযোগে কাজ করে দেশের জনগণের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো: আব্দুল কাইউম সরকার, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।