রাজধানীসহ সারাদেশে গত দুই দিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। কখনো থেমে থেমে আবার কখনো মুষলধারে বৃষ্টির তীব্রতা দেখা গেছে। ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’র প্রভাবে সারারাত ধরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি হয়। সোমবার নগরবাসীর ঘুম ভেঙেছে বৃষ্টির শব্দে। টানা বৃষ্টির কারণে রাজধানীর বিভিন্ন অলিতে-গলিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার ঘরবাড়িতে পানি ঢুকেছে, সড়কে জমেছে পানি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিনে রাজধানীর শুক্রাবাদ ও রাজাবাজার এলাকার বিভিন্ন গলির রাস্তায় দেখা যায়, হাঁটু পানি। এতে এলাকার অফিসগামী মানুষ বিপাকে পড়েন। এই সুযোগে রিকশাচালকরা ২-৩ মিনিটের রাস্তা পার হতে নিচ্ছেন প্রতিজনের ২০ টাকা ভাড়া। বেসরকারি একটি কোম্পানিতে চাকরি করা মনিরুল ইসলাম বলেন, এ এলাকায় অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আগে এ রাস্তায় আরও অনেক বেশি জলাবদ্ধতা হতো। রাস্তা ও ড্রেনের কিছু কাজ হওয়ায় তা কিছুটা কমেছে। বৃষ্টি হলেই সকালে অফিসে যেতেই বিপত্তি সৃষ্টি হয়। এখন হাঁটু সমান পানিতে হাঁটতে গেলে কাপড়চোপড় সব ভিজে যাবে।
ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জমির হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করার জন্য বের হলাম, কিন্তু রাস্তার যে অবস্থা হেঁটে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার অবস্থা নেই। এখন রিকশাওয়ালারাও সুযোগ নিচ্ছে। এই জলাবদ্ধতার জায়গা পার করে দেওয়ার জন্য তারা ভাড়া চায় ২০ টাকা। দুই মিনিটের রাস্তাও না, শুধু কাপড় না ভিজে যাওয়ার ভয়েই রিকশায় উঠতে হচ্ছে।
এদিকে, সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে ‘জাওয়াদ’, আজও সারাদিন বৃষ্টি থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গভীর নিম্নচাপের পর ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ আরও দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে রূপ নিয়েছে। এটি ভারতের উড়িষ্যার পুরি উপকূল দিয়ে স্থলভাগে ওঠার কথা থাকলেও তা হয়নি। এখনো সমুদ্রপথ ধরে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। এটি লঘুচাপ হিসেবে খুলনা-বরিশাল উপকূল দিয়ে বাংলাদেশের স্থলভাগে উঠতে পারে।
সোমবার বরিশাল, খুলনা, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৭৬ বৃষ্টি হয়েছে ফরিদপুরে। এসময়ে ঢাকায় ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।