ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে করোনাভাইরাসের টিকা নিতে না পেরে বিক্ষোভ করেছেন প্রবাসীরা। টিকা নিতে না পেরে প্রথমে ঢাকা মেডিক্যালের বহির্বিভাগে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। পরে হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মীরা তাঁদেরকে হাসপাতাল সীমানার বাইরে বের করে দেন।
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হাসপাতালের বহির্বিভাগ টিকা কেন্দ্রের সামনে এই বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তাঁরা।
বিক্ষুব্ধ প্রবাসীদের অভিযোগ, আজ শুক্রবার ঢামেক কেন্দ্রে টিকা গ্রহণের তারিখ ছিল তাঁদের। টিকা প্রত্যাশীদের অনেকেই রাজধানীর বাইরে এমনকি দূরের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঢাকায় আসেন তাঁরা। অনেকে আত্মীয়-স্বজনের বাসায় ওঠেন। সেখান থেকে ভোরে টিকা কেন্দ্রে আসেন। কিন্তু ঢামেকের টিকা কেন্দ্রে কর্মরতরা জানান আজ টিকা দেওয়া হবে না। এরপর কবে যে টিকা দেওয়া হবে তাও নির্দিষ্ট করে বলতে পারেন না। এখন টিকা নিতে না পারলে আবার নতুন করে গ্রাম থেকে আসতে হবে তাঁদেরকে। এ কারণে টিকার দাবিতে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
বিক্ষুব্ধ প্রবাসীরা জানান, টিকা নিতে না পেরে ঢাকা মেডিক্যালের বহির্বিভাগে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। পরে হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মীরা তাঁদেরকে হাসপাতাল সীমানার বাইরে বের করে দেন। এর পর তাঁরা পাশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। সেখানে তাঁরা টিকার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। এর কিছুক্ষণ পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক কর্মকর্তা তাঁদেরকে তিন দিনের মধ্যে টিকার ব্যবস্থা করে দেবেন আশ্বস্ত করলে তাঁরা যার যার বাসায় ফিরে যান।
টিকা প্রত্যাশী প্রবাসীরা জানান, তাঁদের অধিকাংশ প্রবাসীর ভিসার মেয়াদ চলে যাচ্ছে। সবাই নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক। তাঁরা সবাই এজেন্সিতে টাকা দিয়ে রেখেছেন। কর্তৃপক্ষ তাদেরকে কোনো আশ্বস্তও করতে পারছে না কবে টিকা পেতে পারবেন। তাঁদের দাবি, যেন দ্রুত টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় প্রবাসীদের।
ঢামেক হাসপাতালে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, আমরা কোনো প্রবাসীকেই আজ প্রথম ডোজ টিকা দেওয়ার জন্য টিকা দেইনি। আজ যাঁরা এসেছেন তাঁদের আগের তারিখে টিকা নেওয়ার দিন ছিল। তখন তাঁরা বিভিন্ন কারণে আসতে পারেননি, এখন তাঁরা এসে টিকা নিতে চাচ্ছেন।
নাজমুল হক আরো বলেন, আমাদের এখানে প্রথম ডোজ সিনোফার্মার আছে, তাঁদেরকে সিনোফার্মার টিকা নিতে অফার করেছি। বলেছি, আমাদের এখানে সিনোফার্মা চলছে, আপনারা এটা নিতে পারেন। কিছু প্রবাসী যাঁদের সিনোফার্মা নিলে চলে, যেমন থাইল্যান্ড, ওমান প্রবাসী, তাঁরা সিনোফার্মা নিচ্ছে। আর যাদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার, ফাইজার ও মডার্না না নিলে চলবে না তাঁদেরকে আমরা বলেছি আপনারা খবর রাখেন, যখন সরকার এগুলো চালু করবে তখন আপনারা আসবেন।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, সকালে টিকা নিতে না পারা প্রবাসীরা কিছুটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল। পরে তাঁদেরকে বুঝিয়ে টিকা কেন্দ্র থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন হাসপাতালের পরিবেশ স্বাভাবিক।