আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সদ্য সমাপ্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজের পরাজয়কে স্বীকার করতে ৪৫তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তাগিদ দিয়েছেন রিপাবলিকান নেতারা। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের কাছে হারের ফল পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা থেকে সরে এসে পরাজয় মেনে নিতে তার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারই ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী রিপাবলিকান। এদের মধ্যে নিউ জার্সির সাবেক গভর্নর ক্রিস ক্রিস্টি ভোটে কারচুপির অভিযোগ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়া প্রেসিডেন্টের আইনি দলকে ‘জাতীয় লজ্জা’ হিসেবে অ্যাখ্যাও দিয়েছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি। ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পরাজয় মেনে নিতে ট্রাম্প অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছেন। ভোটে ব্যাপক জালিয়াতি হয়েছে বলে তিনি ও তার প্রচার শিবিরের লোকজন অভিযোগ করে এলেও এখন পর্যন্ত এ সংক্রান্ত কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেননি তারা। এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ রিপাবলিকানকে ট্রাম্পের পক্ষ নিতে দেখা গেলেও অল্প কয়েকজন দলীয় অবস্থানের বিপরীতে দাঁড়িয়েই প্রেসিডেন্টকে হার মেনে নিতে অনুরোধ করেছেন। এ সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে বলেও ভাষ্য মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর। গত শনিবার ট্রাম্প পেনসিলভেনিয়াতেও বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছেন। ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্যটিতে ডাকযোগে আসা লাখ লাখ ভোট বাতিলের দাবিতে তার প্রচার শিবিরের করা মামলা ফেডারেল আদালত খারিজ করে দিয়েছে। এর ফলে বাইডেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে জয়ী ঘোষণা করতে পেনসিলভেনিয়ার কর্মকর্তাদের আর কোনো বাধা থাকল না। ডেমোক্র্যাট এ প্রার্থী রাজ্যটিতে ট্রাম্পের চেয়ে ৮০ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছেন। গণনাকৃত ভোটের হিসাবে বাইডেন মোট ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মধ্যে ৩০৬টি পেতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা প্রেসিডেন্ট হতে প্রয়োজনীয় ২৭০ ভোটের চেয়ে অনেক বেশি। গতকাল রোববার মর্কিন সম্প্রচার মাধ্যম এবিসির ‘দিজ উইক’ অনুষ্ঠানে নিউ জার্সির সাবেক গভর্নর ক্রিস্টি বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে প্রেসিডেন্টের আইনি দলের আচরণ জাতীয় বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। ট্রাম্প শিবির প্রায়ই আদালতের বাইরে নির্বাচনে জালিয়াতির বিষয়টি আলোচনা করছে; কিন্তু যখন তারা আদালত কক্ষে যাচ্ছে তখন তারা এ সংক্রান্ত যুক্তিতর্ক হাজির করতে পারছে না। আমি দীর্ঘদিন ধরেই প্রেসিডেন্টের সমর্থক। দুবার তাকে ভোট দিয়েছি। নির্বাচনের ফলাফল হয়েছে এবং যেটা হয়নি সেটা হয়েছে মনে করে আমরা কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারি না।’ ২০১৬ সালে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীতা সমর্থন করা প্রথম গভর্নর ছিলেন ক্রিস্টি। চলতি বছর বাইডেনের সঙ্গে বিতর্কে ট্রাম্পের প্রস্তুতিতেও সহায়তা করেছিলেন তিনি। রোববার রিপাবলিকান পার্টির আরও কয়েকজন ট্রাম্পকে হার মেনে নিতে অনুরোধ করেছেন। মেরিল্যান্ডের গভর্নর ল্যারি হোগান সিএনএনকে বলেছেন, ‘নির্বাচনের ফল উল্টে দিতে ট্রাম্প শিবিরের ধারাবাহিক চেষ্টায় মনে হওয়া শুরু হয়েছে যে আমরা একটি ব্যানানা রিপাবলিক। ট্রাম্পের উচিত গলফ খেলা বন্ধ করা ও হার মেনে নেওয়া। মিশিগান থেকে নির্বাচিত হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের সদস্য ফ্রেড উপটন বলেছেন, ‘তার রাজ্যের ভোটাররা বাইডেনকে বেছে নিয়ে তাদের রায় জানিয়ে দিয়েছেন।’ নর্থ ডাকোটার কেভিন ক্রেমার এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরুর সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। রিপাবলিকান এ সিনেটর অবশ্য এখন পর্যন্ত দলের বেশিরভাগ সদস্যের মতোই বাইডেনের জয়কে স্বীকৃতি দেননি।