রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানবিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সলোকসানে থাকলেওপ্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাজাকির হোসেন হয়েছেন লাভবান। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময় যোগাদান করেন জাকির হোসেন। বিগত দুই যুগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভাগ্যের পরিবর্তন না হলেও সামান্য বেতনে চাকরি জীবন শুরু করা জাকির হোসেনের ভাগ্যে এসেছে রসহ্যময় পরিবর্তন।
আজকের সংবাদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ বিমানেরসিকিউরিটি অফিসার জাকির হোসেন জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ পরিবারের সদস্যের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লগ্নি করেছেন। সম্পদের বিবরণ জাকির হোসেনের পিতা জয়নাল আবেদীন, ভাই ফরাহাদ হোসেন, বোন শাহিনা আক্তারসহ জনৈক মামুন আনোয়ার, মীর হানিফুর রহমান, এস.এম.শাহিদুল ইসলাম এর নামে এই বিমান কর্মকর্তা উত্তরা সোনারগাঁও জনপথ রোডে ভ্যাহিক্যাল কেয়ার প্রাইভেট লিমিটেড, ভ্যাহিক্যাল পার্টস ষ্টোর, ফ্যান্টাসি আইল্যান্ড,ফ্যান্টাসি সুইমিং কমপ্লেক্স, ফ্যান্টাসি ফুড নামের একাধিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।
উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরে ১৯ নম্বর রোডে ৯৪ ও ৯৬ নম্বর হোল্ডিং বাড়িতে ফ্ল্যাট। ছোট ভাই ফরাহাদ হোসেনের নামে উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরে ১৭ নম্বর রোডে ৫৯ হোন্ডিং ফিগার এইট নামের একটি প্রতিষ্ঠান খুলেছেন এই বিমান কর্তকর্তা জাকির হোসেন। এছাড়াও ১২ নম্বর সেক্টরে ১৮ নম্বর রোডে ৪ নম্বর হোল্ডিং এ নিজে থাকার জন্য ৭ বিমান কর্মকর্তা কে নিয়ে গড়ে তুলেছেন ৭ তলা ভবন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সেরসিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট সিকিউরিটি অফিসার জাকির হোসেন নিজ গ্রাম নীলফামারীতেও গড়ে তুলেছেন পিতার নামে ৭০ একর জমি।
সরজমিন অনুসন্ধান সরজমিন অনুসন্ধানে আজকের সংবাদের প্রতিবেদক রাজধানীর উত্তরা সোনারগাঁও জনপথ রোডে গেলে সন্ধান মেলে সিকিউরিটি অফিসার জাকির হোসেনের একাধিক প্রতিষ্ঠানের। সে সময় ফ্যান্টাসি আইল্যান্ডের পারচেজ ম্যানেজার মিজানুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ভ্যাহিক্যাল কেয়ার প্রাইভেট লিমিটেড, ভ্যাহিক্যাল পার্টস ষ্টোর, ফ্যান্টাসি আইল্যান্ড,ফ্যান্টাসি সুইমিং কমপ্লেক্স, ফ্যান্টাসি ফুড এগুলো সবগুলো প্রতিষ্ঠানের মালিক জাকির হোসেন। তবে সকল কিছু দেখভালের দ্বায়িত্ব ছোট ভাই ফরহাদ হোসেন পিপুল। ভ্যাহিক্যাল কেয়ার প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের মোহাম্মদ কামরুদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, জাকির হোসেনের পিতা জয়নাল আবেদীন এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। ভাই ফরাহাদ হোসেন, বোন শাহিনা আক্তার সহ মোট ৬ জনের নামে এই প্রতিষ্টানে মালিকা ক্রয় করছেন জাকির হোসেন।
এবিষয় কথা বলার জন্য ১২ নম্বর সেক্টরে ১৮ নম্বর রোডে ৪ নম্বর হোল্ডিং গেলে কথা হয় জাকির হোসেনের পিতা জয়নাল আবেদীনের সাথে। তিনি আজকের সংবাদকে জানান, তিনি ভ্যাহিক্যাল কেয়ার প্রাইভেট লিমিটেডের সাথে কোনো ভাবে যুক্ত না। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক তার বড় সন্তান জাকির হোসেন। জাকির হোসেনের বাসার দারওয়ান নয়ন ও গাড়ির চালকের সামীনের সাথে কথা হলে তারা জানান, মূলত অফিস সময়ের পরে জাকির হোসেন উত্তরা সোনারগাঁও জনপথ রোডের প্রতিষ্ঠান গুলোতে সময় দিয়ে থাকেন। উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরে ১৯ নম্বর রোডে ৯৪ ও ৯৬ নম্বর হোল্ডিং বাড়িতে গেলে কথা হয় জাকির হোসেনের ছোট ভাই ফরাহাদ হোসেনের সাথে।
তিনি দাবি করেন তাঁর ভাইয়ের কোনো ব্যবসার সাথে যুক্ত নয়। এছাড়া আরও দাবি করেন এগুলো সব মিথ্যা তথ্য। দুদকে কেনো ডাকা হয়েছিল তাদের পরিবারের ৫ সদস্যকে এমন প্রশ্নে জাকির হোসেনের ছোট ভাই ফরাহাদ হোসেনের কোনো উত্তর না দিয়ে প্রতিবেদককে নিজের ক্ষমতা প্রদশন করেন। এবং একাধিক সাংবাদিক তাঁর পরিচিত বলে জানান। গোটা বিষয়ে দুদিনের চেষ্টা জাকির হোসেনের সাথে দেখা করা সুযোগ হলে তিনি আজকের সংবাদ কে জানান, তাঁর পিতা মানসিক রোগী।
জয়নাল আবেদীনের সাহেব যা বলেছে তা সঠিক নয়। মেয়ে মালয়েশিয়া ভর্তির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি আজকের সংবাদকে জানান, আমরা স্বামী-স্ত্রী দুইজন বিমান বাংলাদেশে চাকরি করি। আর মালয়েশিয়া লেখা পড়া করতে ১০লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকা লাগে। এটা আমাদের জন্য বড় বিষয় নয়। দুদুকের বিষয়ে প্রশ্ন করলে জাকির হোসেনের কোনো কথা বলতে রাজি হননি। প্রসঙ্গত, দুদকে অনুসন্ধান শুরু করলে জাকির হোসেন অজানা কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের থেকে পুরষ্কার স্বরূপ সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট সিকিউরিটি ইনচার্জ থেকে সিকিউরিটি অফিসার পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী হলেন শাহজাহান কামাল কাছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সলোকসানের পরেও জাকির হোসেনের মতো কর্মকর্তারা কিভাবে পদোন্নতি পাচ্ছেন জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, আমাদের শুদ্ধিকরণ কার্যক্রম চলমান। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।