ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামী ১ অক্টোবর। বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হবে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের অংশ হওয়ার ভর্তি যুদ্ধ। এবছর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আসন প্রতি ৪৫ ভর্তিচ্ছু অংশ নেবেন। এবারই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ইতিহাসে প্রথম বিভাগীয় শহরগুলোতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতি রোধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বুধবার বেলা বারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক মো আখতারুজ্জামান এসব তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন ভর্তি পরীক্ষা কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আব্দুস সামাদ, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবু মো. দেলোয়ার হোসেন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মুহাম্মাদ আব্দুল মঈন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য জানান, আগামী ১ অক্টোবর বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত (ক ইউনিট) পরীক্ষা দিয়ে শুরু হবে এবারের ভর্তি পরীক্ষা। এছাড়া ২ অক্টোবর কলা অনুষদ (খ ইউনিট), ২২ অক্টোবর ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ (গ ইউনিট), ২৩ অক্টোবর সামাজিক বিজ্ঞান (ঘ ইউনিট) এবং ৯ অক্টোবর চারুকলা অনুষদের পরীক্ষা (চ ইউনিট) অনুষ্ঠিত হবে।
বিভাগীয় শহরের আট বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে ভর্তি পরীক্ষা
তবে এবারে প্রথমবারের মতো আট বিভাগীয় শহরে হবে ভর্তি পরীক্ষা। ঢাকা বিভাগের পরীক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, চট্টগ্রাম বিভাগের পরীক্ষা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে, রাজশাহী বিভাগের পরীক্ষা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, খুলনা বিভাগের পরীক্ষা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে, সিলেট বিভাগের পরীক্ষা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে, রংপুর বিভাগের পরীক্ষা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে, বরিশাল বিভাগের পরীক্ষা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ও ময়মনসিংহ বিভাগের শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতি আসনের বিপরীতে লড়বেন ৪৫ জন
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, এবছর ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি আসনের জন্য লড়বেন ৬৪ জন। ‘খ’ ইউনিটে ২০ জন, ‘গ’ ইউনিটে ২১ জন, ‘ঘ’ ইউনিটে ৭৩ জন ও ‘চ’ ইউনিটে ভর্তির জন্য প্রতি আসনে ১১৪ জন লড়বেন। একটি আসনের জন্য ভর্তি পরীক্ষায় গড়ে ৪৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেবেন।
এবছর, ‘ক’ ইউনিটের ১ হাজার ৮১৫টি আসনের জন্য ১ লক্ষ ১৭ হাজার ৯৫৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ‘খ’ ইউনিটের দুই হাজার ৩৭৮ আসনের বিপরীতে ৪৭ হাজার ৬৩২ জন, ‘গ’ ইউনিটে এক হাজার ২৫০ আসনের বিপরীতে ২৭ হাজার ৩৭৪ জন, ‘ঘ’ ইউনিটে এক হাজার ৫৭০ আসনের বিপরীতে এক লক্ষ ১৫ হাজার ৮৮১ জন ও ‘চ’ ইউনিটে ১৩৫ আসনের বিপরীতে ১৫ হাজার ৪৯৬ শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
ভর্তি কমিটির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্নের জন্য ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পরীক্ষা গ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের ডিন, প্রক্টরিয়াল টিম ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। অন্যবার ভর্তি পরীক্ষাগুলো ১০টায় শুরু হলেও এবার বিশেষ পরস্থিতিতে সকাল ১১টায় পরীক্ষা শুরু হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হতে পারে। পরীক্ষার মোট সময় দেড় ঘণ্টা। প্রতি ইউনিটে লিখিত ও এমসিকিউ দুই অংশে পরীক্ষা নেওয়া হবে। এর মধ্যে চ-ইউনিট বাদে অন্য চারটি ইউনিটে লিখিত অংশে ৪০ ও এমসিকিউ অংশে ৬০ নম্বর থাকবে। চ-ইউনিটের ক্ষেত্রে সাধারণ জ্ঞান অংশে থাকবে ৪০ এবং অঙ্কনে থাকবে ৬০ নম্বর।
সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘পূর্ববতী ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে যেকোনো ধরনের অসদুপায়, ডিজিটাল জালিয়াতি মূলোৎপাটনে আমরা কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছি। যারা ডিজিটাল জালিয়াতির চক্র, মূল হোতা হিসেবে ভর্তি পরীক্ষাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতো, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নেওয়া হয়েছে। জালিয়াতির মাধ্যমে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল, তাদের শনাক্ত করে ভর্তি বাতিলসহ বহিষ্কার করেছি। এবারও বিশ্ববিদ্যালয় জালিয়াতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স থাকবে।’