হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমিরের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন হেফাজতের নায়েবে আমির মোহাম্মদ হাসান আব্দুল্লাহ।
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আসা বিভিন্ন অপ্রীতিকর অভিযোগসহ নানা কারণ দেখিয়ে মাওলানা আব্দুল্লাহ হেফাজত ইসলামের নায়েবে আমিরের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বলে জানান।
হরতালে সহিংসতায় ক্ষুব্ধ হয়ে দুই সপ্তাহ আগে সংগঠটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আবদুল আউয়াল হেফাজতে ইসলামের পদ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে অন্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর আবার স্বপদে ফিরে আসেন তিনি।
এর আগে গতকাল মামুনুল হক কাণ্ডে সোনারগাঁও রিসোর্টে নাশকতার অভিযোগে হেফাজতের শীর্ষ চার নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে প্রধান কিরে ৮৩ জনের নাম উল্লেখ এবং ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে দিঘীরপার এলাকায় অবস্থিত রয়েল রিসোর্টে এক নারীকে নিয়ে উঠেন হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক। খবর পেয়ে রিসোর্টে নারীসহ মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে রাখেন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় মামুনুল হক দাবি করেন ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। খবর পেয়ে সোনারগাঁও থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মামুনুল হককে উদ্ধার করে। এসময় রয়েল রিসোর্টে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে নারীসহ আটককৃত মাওলানা মামুনুল হকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে লাইভ করেন স্থানীয় কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী। এ ঘটনার পর সোনারগাঁওয়ের জামায়ত, শিবির, বিএনপি ও হেফাজতের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে রিসোর্টে ভাঙচুর করে হেফাজত নেতাকে ছাড়িয়ে নেয়। পরে হেফাজতের নেতাকর্মীরা মোগরাপাড়া চৌরস্তা এলাকায় অবস্থিত আওয়ামী লীগের কার্যালয়, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতার কর্মীর বাড়ি ঘরে হামলা ভাঙচুর চালায়।
এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর আগমনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে তাণ্ডব চালায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা। বায়তুল মোকাররমে এর প্রতিবাদে পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, হেফাজতের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ সমাবেশ করে হেফাজতে ইসলাম। হেফাজতে ইসলামকে নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সঙ্গে মাঠে নামে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন। পুলিশ, হেফাজত এবং ক্ষমতাসীন নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের একপর্যায়ে গুলি ছুড়ে পুলিশ। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঁচজন নিহত হয়। এছাড়া ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানায় হামলা করে তছনছ করে হেফাজতকর্মীরা। এ দুই ঘটনায় অন্তত পুলিশসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়।