চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় দুই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আজিজুল ওরফে আজিদ ওরফে আজিজ (৫০) ও মিন্টু ওরফে কালুর (৫০) ফাঁসি কার্যকর হবে আগামী সোমবার।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে তাদের ফাঁসি কার্যকরের জন্য সব প্রস্তুতি নিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান।
ইতোমধ্যে আইনি সব কাজ শেষ হয়েছে। সোমবার রাত পৌনে ১১টায় দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে বলে সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আজিজ আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের রায়লক্ষ্মীপুর গ্রামের বদর ঘটকের ছেলে এবং মিন্টু একই গ্রামের আলী হিমের ছেলে।
মামলার বিবরণীতে জানা গেছে, আলমডাঙ্গা থানার জোড়গাছা গ্রামের কমেলা খাতুন ও তার বান্ধবী ফিঙ্গে বেগমকে ২০০৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রায়লক্ষ্মীপুর মাঠে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে তাদের দুজনকে ধর্ষণ করা হয় বলে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধের পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলা কাটা হয় ওই দুই নারীর। এ ঘটনায় খুনের পর দিন নিহত কমেলা খাতুনের মেয়ে নার্গিস বেগম আলমডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ওই দুজনসহ চারজনকে আসামি করা হয়। অপর দুজন হলেন— একই গ্রামের সুজন ও মহি। মামলা বিচারাধীন মারা যান আসামি মহি।
২০০৭ সালের ২৬ জুলাই চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সুজন, আজিজ ও মিন্টুকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। এর পর আসামিপক্ষের লোকজন হাইকোর্টে আপিল করেন।
২০১২ সালে ১১ নভেম্বর নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখার আদেশ দেন হাইকোর্ট। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ দুই আসামির রায় বহাল রাখেন এবং অপর আসামি সুজনকে খালাস দেন।
ওই বছরের ২০ জুলাই যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান সুজন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুজন রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চান, কিন্তু তা নামঞ্জুর হয়।
৬ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে কারা অধিদপ্তরকে চিঠি দেয়। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার ৮ সেপ্টেম্বর সেই চিঠি গ্রহণ করে।
এদিকে যশোর কারাগারের একটি সূত্র বলছে, ফাঁসির জন্য কারাগারের জল্লাদ মশিয়ার, কেতু কামালসহ বেশ কয়েকজনের প্রশিক্ষণ চলছে। এ ছাড়া ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুতসহ ইতোমধ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।
এ বিষয়ে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান বলেন, এ দুই আসামির ফাঁসির রায় কার্যকরের জন্য আদেশ এসেছে। আগামী সাত দিনের মধ্যেই হত্যা মামলার দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
তিনি বলেন, ফাঁসি কার্যকরের সময় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও সিভিল সার্জনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। দুই আসামির পরিবারের পক্ষ থেকে শেষ দেখা করে গেছেন শতাধিক লোক।