দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম। একই সঙ্গে ফোরামটি প্রতিমা ভাঙচুরে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান, ভোলা জেলার পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি গৌরাঙ্গ দে’র মুক্তিসহ দুর্গাপূজায় তিন দিনের সরকারি ছুটির দাবি জানিয়েছে।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম, হিন্দু যুব ফোরাম ও হিন্দু ছাত্র ফোরামের যৌথভাবে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, চাঁদপুরের কচুয়া, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, নোয়াখালী সদর উপজেলা, বগুড়ার শেরপুর, কুষ্টিয়ার আড়ুয়াপাড়াসহ সারা দেশে একের পর এক প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে চলছে। বিশেষ করে দুর্গোৎসব আসার আগে এ ধরনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিশেষ করে পূজামণ্ডপে প্রতিমা নির্মাণের সময় দুর্গোৎসবকে বিঘ্নিত করার জন্য একটি চক্র এ ধরনের ঘটনা ঘটায়। এ ধরনের ঘটনা আজ নতুন নয়, বিভিন্ন সরকারের আমলে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ন্যায়বিচার ও প্রতিকার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মেলেনি।
বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের যৌক্তিক দাবি শারদীয় দুর্গাপূজায় সরকারিভাবে ৩ দিনের ছুটি ঘোষণা। এখন শরতকাল। কিছুদিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর সব বাংলা ভাষাভাষি হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে শারদীয়া দুর্গাপূজা সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জে সর্বত্র পারিবারিক কিংবা সার্বজনীন দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণত ষষ্ঠীতে দেবীর বোধন তথা পূজা শুরু হয় এবং দশমীতে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে পূজা শেষ হয়। দুর্গাপূজায় ষষ্ঠী থেকে দশমী- এই পাঁচ দিনের পূজা অনুষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশের হিন্দুরা সরকারি ছুটি পাচ্ছেন শুধুমাত্র ১ দিন, তথা বিজয়া দশমীর দিন। দুর্গাপূজায় মাত্র এই ১ দিনের সরকারি ছুটির কারণে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে দুর্গাপূজার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা পরিবার-পরিজনের সঙ্গে মিলিত হওয়ার বাসনায় সারা বছর শারদীয় পূজার এই দিনগুলোর জন্য অপেক্ষায় থাকে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মানিক চন্দ্র সরকার, সহ-সভাপতি কালীপদ মজুমদার, বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, হিন্দু হেরিটেজ ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আশালতা বৈদ্য প্রমুখ।