দেশের বন্যা, নদী ভাঙন, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ যেকোন দুর্যোগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীরা সম্মুখ যোদ্ধার মত কাজ করে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক।

বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের অফিস কক্ষে উত্তরাঞ্চলের বন্যার সর্বশেষ পরিস্থিতি বিষয়ে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, যেকোন দুর্যোগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীরা সম্মুখ যোদ্ধার মত দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। উজানের ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টির মধ্যেই সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা নদী তীরের জনগণের কাছে ছুটে গিয়েছেন। গতকাল পানির প্রবল চাপে কুড়িগ্রামে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো। সারারাত নির্ঘুম ও নিরলসভাবে কাজ করে ভোরে সেই ব্রিজ বন্ধ করা হয়েছে। আরও যেখানে এমন ক্ষয়ক্ষতি আছে সেখানে বাঁধ রক্ষায় কাজ অব্যাহত আছে।

জাহিদ ফারুক আরও জানান, রংপুরের প্রধান প্রকৌশলীসহ মাঠ পর্যায়ের সকলকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অনলাইন গ্রুপে পানির উচ্চতার আপডেটসহ নিজ এলাকার পরিস্থিতি ছবিসহ জানাচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালকসহ আমরা সবাই সার্বক্ষণিক যোগাযোগ, মনিটরিং ও নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছি।

সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেন, তিস্তার পানি গত ১৯ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে বাংলাদেশ অংশে বৃদ্ধি পায়। ফ্লাড বাইপাস থাকায় তিস্তা ব্যারেজের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং ফায়ার সার্ভিসের সাহায্যে প্লাবিত এলাকার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। প্রশাসনের উদ্যোগের পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে এক হাজার লোকের জন্য ত্রাণ সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার তিস্তা বামতীরে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত প্রসঙ্গে কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, বাঁধ থেকে পানির উচ্চতা নদীর দিকে প্রায় আড়াই মিটার বেশি ছিলো। বাঁধের প্রায় ২৫ মি. অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মন্ত্রণালয়ের তাৎক্ষণিক নির্দেশনায় স্থানীয় জনসাধারণ ও শ্রমিকসহ সকলের অক্লান্ত পরিশ্রমে ভোর ৪টার দিকে মেরামত সম্পন্ন করতে সক্ষম হই।

এদিকে সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান বলেন, তিস্তা অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।লালমনিরহাট ও নীলফামারী এলাকার পানি কমলেও কুড়িগ্রাম ও রংপুরে পানি কিছুটা আছে। সেটাও কমে যাবে। সামনে বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা কম।