দ্রুত পর্যটন প্রবৃদ্ধি অর্জনে তারুণ্যেকে সাইক্লিংয়ে উৎসাহিতকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে নিরাপদ সাইকেল পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখার দাবি জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট সাইক্লিং কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার সকালে বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে জাতীয় জাদুঘরের সামনে “নিরাপদ ভ্রমণ করুন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন” স্লোগানকে সামনে রেখে এক সাইকেল র্যালিতে এ দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট সাইক্লিং এর প্রধান সমন্বয়ক আমিনুল ইসলাম টুব্বুস-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, বাংলাদেশ মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান এর মনজুর হোসেন ঈশা, বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট সাইক্লিং এর সমন্বয়ক রজিনা আক্তার দুনিল, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় সাইক্লিং ক্লাব এর সভাপতি নাজমুল হাসান, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ এর সাধারণ সম্পাদক আরিফ আহমেদ, বিডিক্লিক এর সহ-সভাপতি দিদার হোসেন পাটোয়ারী, গ্রিণফোর্স এর সদস্য আহসান হাবীব সহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আবু নাসের খান বলেন, সাইকেল শুধুমাত্র যাতায়াতের জন্য নয়; পরিবেশের অন্যতম প্রধান বাহন এই সাইকেল। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আমরা এই সাইকেল চলাচল কে নিরাপদ করতে পারিনি। আজকের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হবে আমরা নিজেরা নিরাপদে সাইকেল চলাচল করবো এবং অন্যের অসুবিধার কারণ হবো না।
তিরি আরো বলেন সাইকেল লেনসহ সাইকেল চলাচলের অন্যান্য প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করা দরকার এবং সাইকেল সচেতনতামূলক প্রচারণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় সহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে ভূমিকা রাখতে হবে।
বক্তরা বলেন, পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ করে বেড়ায় একজন সাইক্লিস্ট। এর অন্যতম কারণ সহজ ও সাশ্রয়ী নিরাপদ ভ্রমণে তারুণ্য। এ মাধ্যমে যে আনন্দ উপভোগ তৈরি করার সুযোগ পেয়ে থাকেন, তা অন্যকোন মাধ্যমে স্বল্প সময়ে সাচ্ছন্দ্য ও সন্তোষ প্রকাশের সামান্য হলেও বিশাল স্মৃতিচারণে অনুধাবিত হচ্ছে দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি শিল্প বহিঃপ্রকাশে অনন্য ভূমিকায় সাইক্লিং বহির্বিশ্বে অবতীর্ণ হয়েছে।
কথায় আছে, যত প্রচার- ততোই প্রসার! আমাদের পর্যটন শিল্পে সাইক্লিং তেমন কোন প্রচারণা দৃষ্টিনন্দন করতে দেখা যায় না, তরুণ সাইক্লিস্টরা সপ্তাহের ছুটি বা বিভিন্ন দিবসের ছুটির দিন গুলোতে দলবেঁধে যখন ভ্রমণ করতে যায়, ঝাঁকে ঝাঁকে আকাশের পাখি দেখা ভুলে মানুষ সাইক্লিস্টদের দেখে অনুপ্রাণিত হয় ভ্রমণে। করোনা মহামারিতে গণপরিবহন এড়িয়ে সাইক্লিং গুরুত্ব বাড়ার কারণে ভ্রমণের গতি ত্বরান্বিত করতে বিডি টুরিস্ট সাইক্লিং সেবা আমরা চালু করেছি। সংগঠনের নেতারা এ সময় কয়েকটি সুপারিশ উপস্থাপন করেন। সেগুলো হচ্ছে-
১. সাইকেল নেটওয়ার্ক তৈরি করা। যেমন- বাসা থেকে কর্ম স্থান বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত করতে হবে।
২. সাইকেল বান্ধব অবকাঠামো তৈরি।
৩. সাইকেল আরোহীদের আরো সচেতনভাবে সাইকেল চালানোর জন্য সর্তক করা এবং নিয়ম মেনে সাইকেল চালাতে উৎসাহিত করা।
৪. সাইকেল লেন ব্যবহার করার প্রতি সচেতনতা সৃষ্টি করা।
৫. পরিবেশবান্ধব এই বাহনটি ব্যবহারের সুবিধা নিয়ে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সাইক্লিং এর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
৬. দুর্ঘটনা রোধ করার জন্য নিরাপদ সড়ক ও সাইকেল লেনের ব্যবস্থা করা।
৭. যে স্বল্প পরিমাণ সাইকেল লেন আছে তা দখলমুক্ত করে নিরাপদ সাইক্লিং করার নিশ্চয়তা প্রদান করা।
৮. পারিবারিকভাবে সন্তানকে সাইকেল চালানোয় উৎসাহিত করার জন্য জনমত গড়ে তোলা।
৯. দেশের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সাইকেল পার্কিং সুব্যবস্থা রাখতে হবে।
১০. দেশি-বিদেশি ট্যুরিস্ট সাইক্লিস্টদের সরকারি সুযোগ সুবিধায় অন্তর্ভুক্ত করা করতে হবে।