বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার দেশের মানুষের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার নিয়ে দেশের মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই সরকার বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার সৃষ্টি করে অস্থিতিশীল করছে দেশকে। যার প্রমাণ রংপুরে হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে সরকারের লোকজন। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা দিতেও সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে সরকার।
এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপি নেতা কাইয়ুম চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাহের শামীমসহ বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দলের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল। এ সময় দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশের জনগণ এবং তাদের সম্পত্তির নিরাপত্তা দিতে। একই সঙ্গে আজ আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইয়েরা, বৌদ্ধ খ্রিস্টানসহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের ভাইয়েরা যারা আছেন, তাদের যে ধর্ম বিশ্বাস, পালন, উপাসনালয়গুলো- এগুলোরও কোনো নিশ্চয়তা নিরাপত্তা দিতে পারছে না সরকার।
‘একই সংঙ্গে আমাদের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী মুসলিম সমাজেরও কোনো নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছেন না সরকার। সামগ্রিকভাবে জনগণের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণরুপে ব্যর্থ হয়েছে সরকার।’ তিনি বলেন, সম্প্রতি যে সাম্প্রদায়িক সমস্যাগুলো তৈরি করা হয়েছে, আপনারাই দেখেছেন বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নেতৃত্ব দিচ্ছে কারা? নেতৃত্ব দিচ্ছে ছাত্রলীগের ছেলেরা, নেতৃত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগের লোকেরা।
‘আজও পত্রিকায় এসেছে— রংপুরের ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈকত। এটি খুব পরিষ্কার যে, সরকারের যেহেতু জনগণের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, জনগণের ভোট তারা পায় না, তাই ভোটের অধিকার, গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারের বিষয়ে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার উদ্দেশ্যে তারা এ ধরনের সাম্প্রদায়িক ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে। রোহিঙ্গাদেরও একই অবস্থা, সরকার তাদের নিরাপত্তা দিতেও ব্যর্থ হয়েছে। আগামী নির্বচন নিয়ে বিএনপির প্রস্তুতি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে তো নির্বাচনী কোনো পরিস্থিতি পরিবেশ নেই। নির্বাচন নির্বাচন খেলা করে গত দুই টার্ম জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে তারা।
‘আগামী নির্বাচনে তখনই আমরা অংশগ্রহণ করব, যখন নির্বাচনের সত্যিকারের পরিবেশ তৈরি হবে। আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলেছি যে, আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন সম্ভব নয়। সে জন্যই নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার, তার অধীনে একটি নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে আমরা অবশ্যই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। সে জন্যই আমরা আন্দোলন করছি। পরে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মির্জা ফখরুল সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে সিলেট ত্যাগ করেন। দুপুর ২টায় সুনামগঞ্জে প্রয়াত সাবেক হুইপ ফজলুল হক আসপিয়ার শোকসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে তার।