দেশে ‘নীরব দুর্ভিক্ষ’ চলছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘মানুষ বলতে পারে না। ওই টিসিবির ন্যায্যমূল্যে ট্রাকের পেছনে গিয়ে দাঁড়ায় মুখোশ পরে। এরপরে সেখানে লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়, সেখানে ধাক্কাধাক্কি করে, মারামারি করে কোনো রকমে এক লিটার তেল অথবা একটু ডাল, চালের জন্য।’
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির’ প্রতিবাদে যুবদলের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সমাবেশ তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কলকাতায় যদি ট্রাম ভাড়া চার পয়সা বাড়ে, কলকাতা বন্ধ হয়ে যায়। জিনিসপত্রের দাম বাড়লে কলকাতা বন্ধ হয়ে যায়। এরা (আওয়ামী লীগ সরকার) ১৪ বছর ধরে এতো নির্যাতন-নিপীড়ন-করছে যখন আমরা ঠিক সেইভাবে বন্ধ করতে পারছি না। কিন্তু বন্ধ করতে হবে আমাদের। সমস্ত অন্যায়-নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ করতে হলে, মানুষকে বাঁচাতে হলে, দরিদ্র মানুষের দুই বেলা আহারের ব্যবস্থা করতে হলে এই সরকারকে হটানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার যদি আরও কিছুদিন থাকে তাহলে দেশের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। এরা বিচার ব্যবস্থাকে ধবংস করেছে পরিকল্পিতভাবে, প্রশাসনযন্ত্র আমলাতন্ত্রকে দলীয়করণ করেছে, শিক্ষাব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ধবংস করেছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাদের দলীয় লোকজকে নিয়োগ দিয়ে সেখানে দুর্নীতির আখড়া তৈরি করেছে। আজকে দুর্নীতি এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে, যেখানে কোথাও আর দুর্নীতি বাকি নেই।
তিনি বলেন, আজকের এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে, ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানাতে চাই, আসুন সমস্ত রাজনৈতিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ভয়াবহ কর্তৃত্ববাদী সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের দিন শেষ হয়ে গেছে। সুতরাং ভালোয় ভালোয় পদত্যাগ করুন, পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আজকে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। তারা সন্তানের স্কুলের বেতনের টাকা পরিশোধ করবে না চাল-ডাল কিনবে। ঘরে ঘরে অশান্তি চলছে, দুশ্চিন্তায় আছেন তারা। অথচ সরকার নির্বিকার। সরকারের সেইদিকে নজর নাই। সরকারকে বলব, সোজা পথে সোজাভাবে চলুন। ভালো হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন, জনগণের অধিকার ফেরত দেন, জনগনের ভোটের অধিকার ফেরত দেন।
যু্বদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরবের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, নুরুল ইসলাম নয়ন ও মামুন হাসানের যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুবদলের মোরতাজুল করীম বাদরু, আবদুল খালেক হাওলাদার প্রমুখ।